নিরপরাধ ব্যক্তি দিন কাটাচ্ছেন কারাগারে। আর আসামি রয়েছে প্রবাসে। বলছি যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আজিজের কথা। অভিযোগ উঠেছে, আসামিকে গ্রেফতার না করে নির্দোষ আজিজকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের বাসিন্দা দুই আজিজ। তাদের নাম, গ্রাম ও বাবার নাম এক। তবে মায়ের নাম ও বয়সের দিক থেকে দুজনের ভিন্নতা রয়েছে। ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আজিজের বয়স ৪০ বছর। আর কারাগারে থাকা আজিজের বয়স ৬১। অপরদিকে আসামি আব্দুল আজিজের পিতা আহাদ আলী কারিগর জীবিত থাকলেও গ্রেফতার আব্দুল আজিজের পিতা মৃত। আসামি আজিজের মায়ের নাম মর্জিনা বেগম হলেও গ্রেফতার হওয়া আজিজের মায়ের নাম মৃত খাদিজা।
মামলার সূত্র থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে লোহিত মোহন সাহার ছেলে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৩ অক্টোবর নবকুমার সাহা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে ৯ আসামির মধ্যে ৭ নম্বর আসামি করা হয় আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে (জাতীয় আইডি কার্ডে আছে আজিজুর রহমান)।
চার্জশিট দাখিলের পর মামলাটি বদলি করে যশোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। আদালত পলাতক আসামি আব্দুল আজিজসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানার ভিত্তিতে চলতি মাসের ৯ ডিসেম্বর চৌগাছা থানার এএসআই আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়।
অভিযানের সময় পুলিশ প্রকৃত আসামি আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে বাদ দিয়ে মৃত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। জজ আদালত শীতকালীন অবকাশে থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল আজিজকে তোলা হলে তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
চৌগাছা থানার এএসআই আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, 'আসামির নাম ঠিকানা সঠিক থাকার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া আব্দুল আজিজের পরিবার থেকেও জানানো হয়নি যে তিনি মামালার আসামি না।'
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব জানান, '২০০৯ সালের মামলার ওয়ারেন্ট কার্যকর করতে গিয়ে নাম, বাবার নাম একই হওয়ায় আবদুল আজিজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের সময় তারা কিন্তু বলেনি, এই মামলার আসামি তিনি নয়। তার নামে অন্য মামলা আছে। সেজন্য তারাও মনে করেছে ওয়ারেন্ট হতে পারে। আদালতে হাজির করলেও কিছু বলেনি আজিজ। পরবর্তীতে আদালতের নথিতে জানা যায় এই আবদুল আজিজ, সেই আসামি নয়। আমরা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেবো ভুল হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ওয়ারেন্ট নাম ঠিকানা দেখেই আসামি গ্রেফতার করা হয়। যাচাই করার সুযোগ থাকে না।'