ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব মহাসড়কের এলেঙ্গার ৩শ মিটার অংশে সড়কের উন্নয়ন কাজের ফলে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। এর ফলে প্রায় সময় লেগে থাকছে যানজট। এই ৩শ মিটার অংশে যানজট নিরসনে পুলিশের ১৬ কর্মকর্তাসহ ২৪ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও কোনক্রমেই যানজট নিরসন হচ্ছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে কাঁচামাল ব্যবসায়ীসহ যাত্রীরা।
সরেজমিনে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব হতে টাঙ্গাইল রাবনা বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
দেখা গেছে, জয়দেবপুরের চন্দ্রা হতে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারলেনের উন্নয়ন কাজ চলছে। এর ধারাবাহিকতায় মহাসড়কের এলেঙ্গার ৩০০ মিটার অংশে একলেনের সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আর এইটুকু সড়কের অংশে গর্ত আর খানাখন্দের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। ফলে এলেঙ্গাতে পরিবহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজটের তৈরি হয়। আর এই যানজট বেড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব হতে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত গিয়ে ঠেকে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মহাসড়কে বাসের চেয়ে ট্রাকের চলাচল বেশি হয়। এতে সন্ধ্যার পর পরিবহনের সংখ্যা বেড়ে যায়। এসময় এলেঙ্গাতে পরিবহনগুলো ধীরগতিতে চলতে থাকে, সৃষ্টি হয় যানজটের । আবার অনেক সময় এলেঙ্গার ৩০০মিটার সড়কের খানাখন্দের কারণে অনেক পরিবহন চলন্ত অবস্থায় নষ্ট হয়ে পড়ে। এতে আরও ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। গত ১১ডিসেম্বর রাতে এলেঙ্গাতে চলন্ত অবস্থায় গাড়ি বন্ধ হওয়ায় চালক ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্য শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শাহজাদপুর ট্রাভেলসের সুপারভাইজার মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল (শুক্রবার ) সেতু থেকে এলেঙ্গা ছাড়তে ৬ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। আজও ধীরগতির যানজট। শ্যামলী পরিবহনের চালক মোকলেছুর বলেন, এলেঙ্গায় সড়কের দুইপাশে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এছাড়া মূল সড়কে খানাখন্দের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলাচল করছে। সেতু উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড। তাই সকল রুটের বাস এখান দিয়ে চলাচল করায় যানজটের সৃষ্টি হয়। দিনরাত এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি এসে ধীরগতিতে চলাচল করে।
টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহ্সান বলেন, সড়কের একপাশের সম্প্রসারণের কাজ আগামী একসপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে। বাকি আরেকপাশের কাজ ১৫দিনের মধ্যে কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, সড়কের উন্নয়নের কাজের জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়নি বরং সড়কের ওপর পরিবহনগুলো দাঁড়ানোর কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যদি সড়কে পরিবহনগুলো দাঁড়াতে না দেওয়া হয় তাহলে যানজটের সৃষ্টি হবে না। তবে সড়ক নির্মাণ কাজে কিছুটা যানজট হলেও কাজ শেষ হলে আর যানজট হবে না।
টাঙ্গাইল জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, মহাসড়কের এলেঙ্গাতে যানজট নিরসনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের দুইজন ট্রাফিক পরিদর্শক, আটজন সার্জেন্ট, ছয়জন সহকারী ট্রাফিক সার্জেন্ট ও আটজন পুলিশ সদস্য দিনরাত নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ রয়েছে। কিন্তু এলেঙ্গার ৩শ মিটার সড়কে একলেনে যানবাহন চলাচলের কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার পর থেকে ওই এলাকায় পরিবহনের চাপ বেশি হয়।