চুয়াডাঙ্গায় চাষাবাদের জমিতে অবৈধভাবে মাটিকাটার অভিযোগ এনে সংবাদ প্রকাশসহ মাটি কাটার যন্ত্র (এক্সকাভেটর) আটকের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করার দায়ে পাঁচ ভুয়া সাংবাদিককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সরজগঞ্জ বাজারের একটি চায়ের দোকানে দাবিকৃত চাঁদার টাকা নিতে গেলে তাদেরকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় চাঁদাবাজির শিকার পুরাতন ভান্ডারদোহা গ্রামের পিনু বাদী হয়ে রাতেই গ্রেপ্তারকৃতদের নামে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
আটককৃত পাঁচ ভুয়া সাংবাদিক হলেন, চুয়াডাঙ্গা শহরের জাফরপুরের মৃত শামসুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৬), আরামপাড়ার ইদ্রিস আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (২৬), বাগানপাড়ার খোকন মিয়ার ছেলে আশিক(২৪), জ্বিনতলা মল্লিক পাড়ার মৃত ইছাহক আলীর ছেলে আরিফ (৪৫) ও মালোপাড়ার মৃত কালু খার ছেলে সজিব আকবর (৫০)।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পুরাতন ভান্ডারদোহা গ্রামের শহীদ মালিথার ছেলে পিনু গত ২ ডিসেম্বর মাটি কাটার যন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে চাষের জমি সমান করছিলেন। এ সময় আশিক ও সাব্বির জমির মালিক পিনুর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশসহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ভয় দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তারা মাটি কাটার যন্ত্রটি (এক্সকাভেটর) আটক করে নিয়ে যাবেন বলে হুমকি দেন। পরে পিনু বাধ্য হয়ে ৩৫ হাজার টাকা দিলে চলে যায়।
গত ১৪ ডিসেম্বর এই চক্রটি সিন্দুরীয়া গ্রামের মৃত জব্বার কাজীর ছেলে মনোয়ার হোসেনের কাছেও একইভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
এ ছাড়া এই চক্রটি গত ১৫ ডিসেম্বর ধুতুরহাট গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অপরদিকে সোমবার কথিত এই পাঁচ সাংবাদিক পৌর শহরের বাগান পাড়ার শহীদ হোসেনের ছেলে তানজিলুর রহমানের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। একইসঙ্গে দাবিকৃত চাঁদার টাকা সদর উপজেলার সরজগঞ্জ বাজারে জনৈক জামালের চায়ের দোকানে দিয়ে আসতে বলেন। এ সময় স্থানীয়রা ওই চায়ের দোকান থেকে কথিত ৫ সাংবাদিককে আটক করে সরজগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে আটককৃতদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে চাঁদাবাজীর শিকার পুরাতন ভান্ডারদোহা গ্রামের পিনু বাদী হয়ে একাধিক চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের নামে চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে চাঁদাবাজির অভিযোগে কথিত ৫ সাংবাদিককে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃতদের চাঁদাবাজি মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে সদর থানার পুলিশ।