ভোরে সূর্য ওঠার সাথেই ঘাসের ডগায় মুক্তার মত জ্বলজ্বল করে জ্বলা শিশির কণা আর রৌদ্রময় স্থানে বসে থাকা বৃদ্ধ ও শিশুদের মাদুলি পেতে পড়তে বসার দৃশ্যপট বলে দিচ্ছে পুরোপুরিভাবে শীত চলে এসেছে। প্রথমে শীতের তীব্রতা কম থাকলেও পৌষ মাস শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা, দুপুর গড়িয়ে গেলেও দেখা মিলছে না সূর্যের।
সাভার ও আশুলিয়া ঘনবসতি হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা তেমন অনুভূত হয় না। তবে এবার শীতের তীব্রতা লক্ষ্য করা গেছে। তাই শীতের গরম কাপড় অপরিহার্য হয়ে উঠেছে এখানকার বৃদ্ধ, শিশুসহ সবার। এই চাহিদার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন ফুটপাত ও মার্কেটে শীতের গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেকেই। জমেও উঠেছে তাদের এই শীতের কাপড়ের ব্যবসা।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারের হেমায়েতপুর, আমিনবাজার, সাভার স্ট্যান্ড ও আশুলিয়ার বলিভদ্রবাজার, জামগড়া, আশুলিয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মার্কেটের কাপড়ের দোকানে চাহিদার ওপর ভিত্তি করে সাজিয়ে রেখেছে শীতের কাপড়। এছাড়া ফুটপাতে শিশু, বয়স্ক ও মহিলাদের জন্য আকর্ষণীয় শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফুটপাতে শীতের কাপড় বিক্রেতা জীবন। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, প্রায় এক মাস ধরে শীতের কাপড় বিক্রি শুরু করেছি। প্রথমে সারা দিন রোদ আর রাতে হালকা শীত অনুভব হয়েছিল। তাই তেমন বেচা বিক্রি হয় নাই। তবে এক সপ্তাহ হলো শীত বেড়েছে, এখন জমে উঠেছে এখানকার শীতের কাপড়ের ব্যবসা।
একই এলাকার বঙ্গ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী হেলাল বলেন, এখানে বেশীরভাগ মানুষ গার্মেন্টস শ্রমিক। উন্নত শীতের কাপড় তাদের নাগালের বাইরে। তাই তাদের রুচি ও চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে অল্প দামের মধ্যে ভালো কাপড় সরবরাহের চেষ্টা করি। হালকা শীত যখন ছিল তখন পাতলা কম্বল বিক্রি করেছি অনেক। এখন শীত বেড়ে যাওয়ায় মোটা কম্বলের চাহিদা বেড়েছে। মোটা কম্বল ১৪'শ থেকে শুরু করে প্রকারভেদে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তিনি।
ভলিভদ্র বাজার এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী জামাল জানায়, আগের মত ব্যবসা নেই। এখন লাভ কম করে কাপড় বিক্রি করতে হয়। বেশি বিক্রি হলে আবার পুষিয়ে যায়। সকল কারখানার শ্রমিকরা এখান থেকেই কাপড় কেনে। এখানে সবসময় সব ব্যবসায় জমজমাট থাকে।
শীতের কাপড় কিনতে আসা পোশাক শ্রমিক মমতা বলেন, আমার হালকা শীতের কাপড় ছিলো। ভেবেছিলাম শীত তেমন পরবে না। কিন্তু হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে শীতের পোশাক কিনতে আসলাম। আমার জন্য ২৫০ টাকার একটি সোয়েটার কিনেছি। আর আমার শিশু সন্তানের জন্য ৩৫০ টাকায় গরম কাপড় কিনলাম। এখানে শিশুদের কাপড়ের দাম একটু বেশি।
অপর ক্রেতা জমিলা বলেন, আমার বাড়ি উত্তরবঙ্গে, সেখানে তীব্র শীত। বাড়িতে বাবা-মার সঙ্গে থেকে আমার মেয়ে লেখাপড়া করে। তাদের সবার জন্য শীতের কাপড় কিনতে আসলাম। মেয়ের জন্য কিনেছি, বাবা-মার জন্য কাপড় কেনা হলে তা গ্রামে পাঠাবো। তবে অন্যান্য শীতের চেয়ে এবার একটু কাপড়ের দাম বেশি।