যশোরে গত কয়েক দিনের শৈত্যপ্রবাহের কারণে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮-৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই সঙ্গে প্রকৃতি ঢেকে যায় ঘন কুয়াশায়। শীত-কুয়াশায় প্রকৃতি যখন বৈরী হয়ে ওঠে তখন মাঠে মাঠে বোরো আবাদের প্রস্তুতি চলছে। বিস্তীর্ণ মাঠে রয়েছে বোরোর বীজতলা। তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে এসব বীজতলা।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শৈত্যপ্রবাহ বাড়লে বা তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলেই বীজতলা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। যশোর সদর, মণিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা, অভয়নগর, বাঘারপাড়া, শার্শা ও চৌগাছা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে এবারের বোরো মৌসুমে ১ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। তবে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় যশোরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অধিকাংশ ধানের বীজতলা। এতে শঙ্কিত কৃষকরা।
সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামের কৃষক সালাম শেখ জানান, আমন মৌসুমে ধানের সঠিক মূল্য না পাওয়ায় লাভের মুখ দেখতে পাননি। বোরো আবাদ করে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেন তিনি। তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদের জন্য গত বছরের চেয়ে বেশি দামে বীজ ধান কিনে বীজতলা তৈরি করেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাপমাত্রার এ বিরূপ প্রভাবে ধানের বীজতলা এবং বোরো চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তিনি।
একই এলাকার কৃষক ফজলু দফাদার জানান, বীজতলায় থাকা চারাগুলো মারা যাচ্ছে। চারা লালচে হয়ে যাচ্ছে এবং চারা বড় হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুশান্ত কুমার তরফদার বার্তা২৪.কমকে জানান, যশোরে কৃষকদের বোরো আবাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা কম থাকলে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। এ পরিস্থিতি বীজতলার জন্য ক্ষতিকর। যশোরের দেড় লাখ হেক্টর জমির ধান চাষ নির্ভর করছে বীজতলার উপর। কাজেই শৈত্যপ্রবাহ থেকে বীজতলাকে রক্ষা করতে হবে। এ ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নার্সিং ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।