ফরিদপুরের শহর ও গ্রামাঞ্চলের খামারগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ (এলএসডি)। গত দুই মাসে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে জেলার নয়টি উপজেলার চার হাজার ১৯৫টি গরু। এর মধ্যে দশটি গরু মারা গেছে। এ রোগের প্রতিষেধক ও সঠিক ওষুধ না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। মশা-মাছি ও কীটপতঙ্গের মাধ্যমে গরুর শরীরের ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে কোন গরু আক্রান্ত হলে গরুটির শরীরে গোটা গোটা ওঠে, পা ফুলে যায়, গরুর দুধ দেওয়া কমে যায়। আপাতত ছাগলের পক্সের প্রতিষেধক দিয়ে নিরাময়ের কাজ চালানো হচ্ছে।
বোয়ালমারী উপজেলার খামারি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, আমার খামারে সাতটি গরু আছে। এর মধ্যে দুইটা গরুর লাম্পি স্কিন রোগ হইছিলো। কিন্তু সময়মতো চিকিৎসা দেওয়ায় দুইটা গরুই সুস্থ হয়ে উঠেছে।
সদরের টেপাখোলা এলাকার খামারি মুরাদ হোসেন জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ে তিনি আতংকের মধ্যে রয়েছেন। যদিও তার খামারে কোন গরুর এ রোগ হয়নি। তিনি জানতে পেরেছেন এ রোগটি ছোঁয়াচে। এজন্য তার গরুগুলি নিয়ে তিনি চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
ফরিদপুরের প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা নূরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, গত দুই থেকে আড়াই মাস ধরে এই রোগটি ফরিদপুরে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে এ রোগের কথা আগে শোনা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে বিদেশ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া যেসব গরু দেশে আসছে তাদের মাধ্যমে ভাইরাসবাহিত এ রোগ হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, অপরিষ্কার পরিবেশ, নোংরা খাবারপাত্র, মশা ও মাছির কামড়, গরুর লালা ও দুধের মাধ্যমে এ রোগ সংক্রামিত হয়। আক্রান্ত গরুর দুধ জ্বাল দিয়ে খেলে মানবদেহে এ রোগ ছড়ানোর সুযোগ নেই।
নুরুল্লাহ আহসান বলেন, এ রোগে মৃত্যুহার কম হলেও ঝুঁকি বাড়ছে দুগ্ধ উৎপাদন ও পশু চামড়ার ক্ষেত্রে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যায়। আবার গাভী আক্রান্ত হলে দুগ্ধ উৎপাদন কমতে থাকে। তাছাড়া এ রোগের প্রতিষেধক আমাদের কাছে নেই।
তিনি বলেন, আপাতত ছাগলের পক্সের ওষুধ দিয়ে সীমিত পর্যায়ে লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করা হচ্ছে।