নয়নাভিরাম কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সের মানুষ ভিড় জমান এখানে। দুর্লভ লাল কাঁকড়া, তিন নদীর মোহনা, সুবিস্তৃত ঝাউবনের কুয়াকাটার পরতে পরতে সৌন্দর্য। তবে পর্যটক ও স্থানীয়দের অসচেতনতা এবং খেয়ালিপনার কারণে সৌন্দর্য হারাচ্ছে এই সমুদ্র সৈকতটি। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সৈকতে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকের বর্জ্য, ডাবের খোসা, কাগজের টুকরো, উচ্ছিষ্ট খাবারের প্যাকেট, সফট ড্রিংকের ক্যান ফেলে রাখছেন পর্যটক ও স্থানীয়রা। এগুলো পরিষ্কারেও কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। হঠাৎ সৈকতে আসলে মনে হবে এ যেন ময়লার ভাগাড়।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পর্যটকরা এসে চিপসের প্যাকেট, অন্যান্য পলিথিন, ড্রিংক্সের বোতল, ক্যান ফেলে যায়। এছাড়া স্থানীয়দের মধ্যে যারা এখানে ব্যবসা করেন তারাও ময়লা আবর্জনা ফেলেন। এ কারণে সারা বছরই জায়গাটি নোংরা থাকে।
সৈকতের পরিবেশ নষ্টের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছও মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা বলছেন, সৈকতে সকাল বিকাল মরা মাছ ভেসে আসছে। হাঁটার সময় পায়ের নিচে পচা মাছ পড়ছে। সেগুলো ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
কুয়াকাটা পৌরসভার পক্ষ থেকেও নিয়মিত সৈকত পরিষ্কার করা হয়না বলে অভিযোগ করছেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মালিক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা চাই কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার থাকুক। কিন্তু পর্যটকদের অসেচনতা এবং খেয়ালিপনার কারণে জায়গাটি নোংরা হচ্ছে।
তাৎক্ষণিক প্রমাণ হিসেবে এক পর্যটককে দেখিয়ে তিনি বলেন, উনি দাঁড়িয়ে চিপস খাচ্ছেন। একটু পরে দেখবেন যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানেই প্যাকেটটি ফেলে যাবেন।
এভাবে বোতল, প্লাস্টিক, পলিথিন দিয়ে সৈকতকে আবর্জনার ভাগাড় করা হচ্ছে।
আরেক স্থানীয় খুরশিদ বলেন, এখানে পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দোষও আছে। তারা ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা তৈরি করে দেননি। ফলে পর্যটকরা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবে-এটা স্বাভাবিক।
পর্যটক রেজাউল করিম বার্তা২৪. কমকে বলেন, ময়লা আবর্জনা ফেলে সুন্দর এ সৈকতকে আমরা নষ্ট করে দিচ্ছি। এতে বিদেশি পর্যটকরা কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিবে। এ কারণে আমাদের সৈকতকে সুন্দর ও পরিষ্কার রাখতে হবে।
এদিকে সৈকতের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে ময়লা ফেলার কোনো নির্ধারিত জায়গা খুঁজে পাওয়া যায়নি।