শীত তীব্র থেকে তীব্রতর হলেও অনেকেই থাকে এই শীতের অপেক্ষায়। এই শীত অনেকের জন্য নিয়ে আসে আশীর্বাদ ও শুভ বার্তা। এই শীতকে ঘিরে বিভিন্ন উৎসবে মেতে ওঠে বাঙালিরা।
এই শীতে পিঠাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে মৌসুমি কর্মসংস্থান। ফুটপাত ও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে বসে পিঠার দোকান। শক্ত কাজের ক্ষমতা না থাকায় অনেকেই এই ব্যবসা বেছে নেয়।
ঢাকার সাভারেও এর ব্যতিক্রম নয়। তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হলেও পিঠা বিক্রেতার ওপর শীতের প্রভাব পড়ে না, বরং তারা অপেক্ষায় থাকে শীতের। শীত বাড়লেই বিক্রি বাড়ে তাদের। প্রতি বছর ৯ মাস অপেক্ষার পর শীত আসে। আর এই তিন মাস ব্যবসা করে সারা বছর একটু ভাল থাকার স্বপ্ন দেখে তারা।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাভারের বেশ কয়েকটি পিঠা ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে তারা সবাই জানান, সারা বছর অপেক্ষা করে তিন থেকে চার মাস সুযোগ হয় ব্যবসার। তার মধ্যে গড়ে ১ মাস তেমন কোন বিক্রি হয় না। শীতের শুরু ও শেষের দিকে টানাটানি করে চলে তাদের ব্যবসা। তবে তিন মাসে যা হয় তাতেই খুশি সারা বছর।
রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে ভাগ্য বদলের জন্য ৪৫ বছর বয়সে আমিরন (৪৮) পাড়ি জমিয়েছিলেন আশুলিয়ায়। বয়স বেশি তাই কোন কারখানায় কাজ জোটেনি তার। মানুষের বাসায় টুকটাক কাজ করে চলে তার জীবন। আর শীত শুরু হলেই নেমে পরেন পিঠা বিক্রিতে।
সাভারের পিঠা বিক্রেতা আসমা বলেন, আমি সারা বছরই পিঠা ও সিঙ্গারা বিক্রি করি। পিঠা বিক্রি করেই আমার সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তাই পিঠা সবসময়ই বিক্রি করি। শীতের সময় ছাড়া পিঠা কেউ খেতে চায় না। সেজন্য সিঙ্গারা বিক্রি করি। আর অপেক্ষায় থাকি শীতের। শীত এলেই আমার পিঠা বিক্রি বাড়ে।
জামগড়া এলাকার পিঠা বিক্রেতা সোনালি বলেন, আমি সারা বছর দিন হাজিরার কাজ করি। শীত আসলে এই পিঠার ব্যবসা শুরু করি। শীতের কয়মাস আমার কষ্ট কম হয়। এ সময়টা আমার সারা বছরের চেয়ে ভাল কাটে। তাই ভাল থাকার আশায় শীতের অপেক্ষা করি। আর শীত এলেই আমি ভালো কাপড়ও কিনতে পারি। এখানকার মানুষ সবাই চাকরি করে। বাসায় পিঠা বানানোর সময় পায় না কেউ। তাই এখানে শীতকালে পিঠার চাহিদাও থাকে ব্যাপক।