মেহেরপুরের গাংনীর মহিষাখোলা গ্রামে প্রবাসীর স্ত্রী আফরোজা খাতুন (২৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। টাকা লেনদেনের সম্পর্ক ধরে ব্ল্যাকমেইল থেকে রক্ষা পেতে ঠাণ্ডা মাথায় আফরোজার প্রতিবেশী মোনায়েম হোসেন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে জানায় পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে মোনায়েম।
আফরোজা হত্যাকাণ্ডের একমাত্র আসামি মোনায়েম হোসেন মহিষাখোলা গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। নিহত আফরোজার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন তথ্যের উপর ভিত্তি করে সন্দেহভাজন হিসেবে মোনায়েমকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
আফরোজা হত্যা মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম বলেন, আফরোজার স্বামী বিদেশে যাওয়ার সময় প্রতিবেশী মোনায়েমের কাছ থেকে টাকা ধার নেয় আফরোজা। এর জের ধরে দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে আফরোজা মোনায়েমের থেকে টাকা ধার নিত। সাম্প্রতিক সময়ে ৪৫ হাজার টাকা ধার চায় আফরোজা। টাকা দিতে মোনায়েম অপারগতা জানালে আফরোজা তাকে ধর্ষণের মামলার ভয় দেখায়। এভাবে কয়েকদিন ভয় দেখানোর পর মোনায়েম তাকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয়। টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আফরোজাকে বাড়ির পাশের তুলাক্ষেতে আসার প্রস্তাব দেয় মোনায়েম। সেখানে পূর্বপরিকল্পনা মাফিক রসি দিয়ে আফরোজার গলায় পেঁচিয়ে ধরে তাকে হত্যা হয়। পরে তাকে পুকুরের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পান বরজের উপরে রসির ওই অংশ ফেলে দেয় মোনায়েম। হত্যাকাণ্ডের এই রোমহর্ষক বর্ণনা মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয় হত্যাকারী। বিজ্ঞ আদালত ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ওসি তদন্ত আরো বলেন, মোনায়েমের ভ্যানে ব্যবহৃত ২৫ হাত রসি থেকে সাড়ে তিন হাত মতো কেটে নিয়ে হত্যা করতে যায়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ওই রসি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত নয়।
এদিকে অল্প সময়ের মধ্যেই হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের জট উন্মোচন করায় এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে এসেছে স্বস্তি।