রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চরাঞ্চলে কীটনাশকমুক্ত নিরাপদ সবজি উৎপাদন করছে কৃষকরা। পরিবেশ দূষণমুক্ত রেখে ক্ষতিকর পোকা ও রোগবালাইমুক্ত এই সবজির চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সবজি ক্ষেতে সব সময় ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। পোকার হাত থেকে বাঁচতে কীটনাশক দিতে হয়। এতে সবজি বিষযুক্ত হয়ে পড়ে। তাই পোকার হাত থেকে রক্ষা পেতে পুরো সবজি ক্ষেত নেট জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে চাষকৃত বেগুন ও মিষ্টিকুমড়া জমিতে কীটনাশক দেওয়া লাগে না। অন্যদিকে পোকা-মাকড় ও পশু-পাখির অত্যাচার থেকে বাঁচা যায়। পাশাপাশি উৎপাদন খরচও কম হয়। একটি নেট জাল দিয়ে একের অধিক জমিতে সবজি উৎপাদন করা যায় এবং পরবর্তীতে নেট জাল আবার ব্যবহার করা যায়।
এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সবজি চাষে সফল হয়েছে চরাঞ্চলের চাষীরা। এই সফলতা ধরে রাখতে চলছে তাদের সংগ্রাম। উপজেলার তাম্বুলপুর ও ছাওলা ইউনিয়নের ৯টি চরে বর্তমানে এই পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) উপজেলার গাবুড়ার চর, জুয়ান, শিবদেব ও চর তাম্বুলপুর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, চরাঞ্চলের বিভিন্ন সবজি ও সবজির বীজ উৎপাদনে নেট পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ভাল চারা থেকে ভাল সবজি উৎপাদন হচ্ছে। এখানকার বহু কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করে বাজারজাত করছেন। তাদের উৎপাদিত দেশি বেগুন, করলা, ফুলকপি, পাতাকপি ও মুলা এখন বাজারেও পাওয়া যাচ্ছে।
গাবুড়ার চর গ্রামের সবজি চাষি আতাউর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আগে আমরাও কীটনাশক দিয়ে সবজি উৎপাদন করতাম। ওই সবজি পরিবারের সবাই মিলে খেতাম। পরে জানতে পারি ওই সবজির মাধ্যমে আমরাও বিষ খাচ্ছি। তাই এখন বিষমুক্ত সবজি বাজারজাত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। তাই বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করছি।
চর তাম্বুলপুর গ্রামের সবজি চাষি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাজারে বিষমুক্ত সবজির প্রচুর চাহিদা। সবজি বেচতে হাটে যেতে হয় না। প্রতিদিন সকালে পাইকাররা বাড়িতে এসে সবজি ক্রয় করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'নিরাপদ বিষমুক্ত সবজি চাষে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সহযোগিতা করছে। বিষমুক্ত সবজি চাষে এখন চাষিরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।'
আর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, সবজি চাষে নেট পদ্ধতির পাশাপাশি গুটি ইউরিয়া, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন ও ব্যবহার করে নিরাপদ সবজি চাষ করা হয়। এতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে