সাভারে নাফিজা (৭) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আটক দম্পতির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। শিশু নাফিজাকে কানের দুলের জন্য শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। গ্রেফতার দম্পতি হলেন- সোনালী ও তার স্বামী মোকসেদুল ইসলাম। সোনালীর বাবার বাড়ি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি বলে জানা গেছে। তারা সবাই সাভারের জয়নাবাড়ি এলাকার হাজী জাহাঙ্গীরের পাঁচতলা বাড়িতে থাকতো।
এর আগে গত শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাভারের হেমায়েতপুরের জয়নাবাড়ি এলাকার হাজী জাহাঙ্গীরের পাঁচতলা বাড়ি থেকে নিহত নাফিজার বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত নাফিজা হেমায়েতপুর জয়নাবাড়ি এলাকার গোল্ডেন বাংলা স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। তার বাবা হাবিবুল্লাহ নিপু মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার ওই শিশু নিখোঁজ হলে সন্ধান চেয়ে চারপাশে মাইকিং করে স্বজনরা। কোনো খোঁজখবর না পাওয়ায় শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করলে সাভারের জয়নাবাড়ি এলাকার হাজী জাহাঙ্গীরের পাঁচতলা বাড়ির ভাড়াটিয়া সোনালী ও তার স্বামী মোকসেদুল ইসলামের কক্ষ থেকে ওই শিশুর বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোনালী ও তার স্বামী মোকসেদুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ।
আটকদের স্বীকারোক্তি মতে, কিছুদিন আগে নিহত শিশুর মায়ের কাছ থেকে ধারে তিন হাজার টাকা নেয় সোনালী ও তার স্বামী মোকসেদুল ইসলাম। ওই টাকা পরিশোধের জন্য নাফিজার কানের দুল চুরির সিদ্ধান্ত নেয় তারা। পরে নাফিজা তাদের ফ্ল্যাটে গেলে তার কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে নাফিজা চিৎকার কর। এসময় কাপড় দিয়ে শিশুটির মুখ চেপে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তার কান থেকে দুল খুলে নিয়ে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মরদেহটি ফ্রিজে রেখে ওই কানের দুল ১৮'শ টাকা বিক্রি করে তাতে আরও ২'শ টাকা ভরে ২ হাজার টাকা নিহত শিশুর মাকে দেয় সোনালী। সুযোগ বুঝে মরদেহটি সরিয়ে দেওয়ার জন্য বস্তাবন্দী করে তার খাটের নিচে রাখে। এমতাবস্থায় তার কক্ষ থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে আজ দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।