নিজ এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাদাম বিক্রি করে বেড়ান আংশিক দৃষ্টি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী গিয়াস মোড়ল (৫০)। সারা দিন বাজারে হাঁটেন আর মানুষের সঙ্গে দুষ্টুমির ছলে বাদাম বিক্রি করেন তিনি। শুধু তাই নয়, বাদাম বিক্রি করে সংসারে স্ত্রীকে নিয়ে বেশ সুখেই আছেন শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের মোড়লকান্দি গ্রামের মৃত হানিফ মোড়লের ছেলে গিয়াস মোড়ল।
শিবচর বাজারের ৭১ চত্বর, উপশহর, হাতিরবাগান মাঠসহ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় একবস্তা বাদাম কোলে নিয়েই বাদাম বিক্রি করেন তিনি। তারমধ্যে রয়েছে কাগজে মোড়ানো ছোট ছোট ১০টাকা মূল্যের বাদামের প্যাকেট। পরিচয় জানতে চাইলে ব্যস্ততার সঙ্গে বলতে থাকেন জীবন যুদ্ধের গল্প।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ৭১ চত্বরে এমন অবস্থায় তার সাথে দেখা হলে তিনি বলেন, মায়ের কাছে শুনেছি ছোট বেলা আমার জ্বর হয়েছিল। বাবার আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় চিকিৎসা করাতে পারে নাই। তার কয়েক মাস পর থেকেই আমার চোখ এরকম হয়ে গেছে গেছে।
তিনি আরো জানান, ছোট বেলায় অভাব আর অনটনের কারণে স্ত্রীকে নিয়ে চলে যাই পাকিস্তান। সেখানে দুই মেয়ে আর দুই ছেলের জন্ম হয়। তাদের সকলকে নিয়ে ভালোই ছিলাম সেখানে। সেখানে ২৫ বছর থেকে দেশের টানে ২০১১ সালে স্ত্রীকে নিয়ে চলে আসি দেশে। তবে কাগজপত্রে ঝামেলা থাকার কারণে নিজের ছেলে মেয়েকে এখনো দেশে আনতে পারেননি তিনি। তাই স্ত্রীকে নিয়েই চলছে তার সংসার। নিজের বাড়ি ছাড়া তার কোনো জমি নাই। প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে সে বাদাম ভাজা বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, এই বাদাম বিক্রির টাকা দিয়েই চলতে হয়। যা আয় হয় তাই দিয়েই সংসার চলে।
গিয়াস মোড়লের গ্রামের প্রতিবেশী লাভলু হাওলাদার জানান, আমরা ৪/৫ বছর বছর যাবত দেখছি গিয়াস মোড়ল শিবচর বাজারের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন। তিনি একজন সরল সোজা লোক। সব সময় হাসতে থাকেন।
তিনি নিজে আয় করে সংসার চালান। তবে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার কাছ থেকে কোন ভাতা পান কিনা আমার জানা নেই।
শিবচর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, গিয়াস কোনো ভাতা পান কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমার কাছে আসলে বিষটি জেনে শুনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।