নাটোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সোহানুর রহমান সুরুজ ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রুবেলের পারস্পরিক বিরোধে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। দুই নেতা সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে ঐক্যমতে আসতে পারছেন না। পরস্পর বিপরীত মেরুতে অবস্থান নেওয়ায় তাদের অন্তর্গত ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।
জানা যায়, আগামী বছরের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিশেষ প্রস্ততি সভা করার ঘোষণা দিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেন উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক নুরুজ্জামান নুর। একদিন পর গতকাল শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রুবেল পাল্টা বিজ্ঞপ্তিতে প্রস্ততি সভা স্থগিত করেন। এতে অন্য নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন সভা নিয়ে। এ নিয়ে কিছুটা উত্তেজনার মধ্যেই নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের কান্দিভিটুয়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রস্ততি সভা করেন সভাপতি সোহানুর রহমান সুরুজ। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফলতার সাথে পালনে কর্মীদের দিক নির্দেশনা দেন তিনি।
এছাড়া সভা থেকে মুজিববর্ষ উদযাপনে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্ভাব্য কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ডাবলু, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয় অভি, আসাদুজ্জামান আশিক, পৌর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অন্তর দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান খান প্রমুখ।
সভা থেকে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী পালনের মতো মুখ্য সাংগঠনিক কাজের প্রস্ততি সভায় সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সদর ইউনিটকে জেলার সবচেয়ে সক্রিয় ছাত্রলীগ ইউনিট দাবি করে আগামীতে প্রতিটি কর্মসূচিতে সভাপতি ও সম্পাদকের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ কামনা করে বক্তব্য দিয়েছেন ছাত্রলীগ কর্মীরা।
প্রস্ততি সভায় অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রুবেল দাবি করে বলেন, 'আমার সাথে আলোচনা না করে একক কর্তৃত্বে প্রস্ততি সভার তারিখ নির্ধারণ করেছেন সভাপতি। এ নিয়ে জানতে একাধিকবার সভাপতির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাইনি। তাই শেষ পর্যন্ত সভায় অংশ নিইনি।'
সভাপতি সোহানুর রহমান সুরুজ বলেন, '২৫ ডিসেম্বর সকল উপজেলা ও পৌর কমিটির যৌথ সভায় প্রতিটি উপজেলা ইউনিটকে নিজেদের প্রস্ততির জন্য আহ্বান জানিয়ে সভা করতে নির্দেশনা দেন জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। সময় স্বল্পতায় তাই ৩ দিনের নোটিশে সদর ইউনিটের সভা আহ্বান করেন দপ্তর সম্পাদক। যেহেতু সাধারণ সম্পাদকও ওই যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন তাই জেলা কমিটি ব্যতীত অন্য কারো নির্দেশে সভা আহ্বান বা স্থগিত হতে পারে না।'
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস এ প্রসঙ্গে বলেন, সভাপতি-সম্পাদকের দূরত্বে কর্মীরাও যেমন বিভ্রান্ত, আমরাও তেমন বিব্রত। দুজনকেই কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হবে সংগঠনের পক্ষ থেকে। দ্রুত বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হবে।