দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করছে সরকার। এই কম্বল বিতরণ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয় থেকে পাঠানো কম্বল জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করা হলেও সাধরণ মানুষের অভিযোগ তারা সেটি পাচ্ছেন না। তারা বলছেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও গ্রামের মেম্বাররা তাদের পছন্দের মানুষদেরকে তালিকা করে তাদের মাঝে কম্বল বিতরণ করছে।
এদিকে জনপ্রতিনিধিরা যদি কম্বল বিতরণে অসাধু উপায় অবলম্বন করে তবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুসারে শীতে এ বছর চুয়াডাঙ্গায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয় থেকে ২৫ হাজার পিস কম্বল এসেছে।
জেলার নীলমনিগঞ্জের কৃষক আফাজ মন্ডল বলেন, একটা কম্বল পাবার আশায় চেয়ারম্যানের কাছে গেছিলাম। কিন্তু চেয়ারম্যানের লোকজন বললো আমার নাম তালিকায় লেখেনি গ্রামের মেম্বার। তাই এবছর আমি কম্বল পাবো না।
আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জের রবি বিশ্বাস বলেন, চেয়ারম্যান, মেম্বারদের পচ্ছন্দের লোকজনই কম্বল পাচ্ছে। আমাদেরকে কেউ চোখে দেখে না।
চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের পাশে কথা হলো ৮০ বছরের বৃদ্ধ ইদু মন্ডলের সঙ্গে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে সারা দিন সারা রাত ছেড়া কয়েকটা কাপড় গায়ে দিয়ে রইছি। শুনছি সরকার নাকি গরীব মানুষের জন্য কম্বল দেই। কই একটা কম্বলওতো পেলাম না। মণী মেম্বার কম্বল দেওয়ার কথা বলে আমার নাম লিখে নিয়ে গেলেও আজও তার কোনো খবর নেই।
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে মমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শীতার্ত মানুষের জন্য যে কম্বল দেয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। আমার ইউনিয়নে তিন হাজার কম্বল প্রয়োজন হলেও মাত্র চারশ কম্বল পেয়েছি। তাই সবাইকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর যারা পাচ্ছেন না তারাই নানা অভিযোগ করছেন।
জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, এবছর ২৫ হাজার কম্বল এসেছে চুয়াডাঙ্গায়। আরও ২০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। সরকারের দেয়া কম্বল পাওয়ার অধিকার গ্রামের অসহায় শীতার্ত মানুষের। এসব কম্বল বিতরণে অনিয়মের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।