প্লাস্টিক-বর্জ্য দূষণে হুমকিতে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত

পটুয়াখালী, দেশের খবর

আব্দুস সালাম আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী | 2023-08-22 12:31:25

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে প্লাস্টিক ও আবর্জনা ফেলায় স্থানীয়ভাবে পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি পর্যটকরাও বিড়ম্বনায় পড়ছেন। পাশাপাশি এসব ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্য সরাসরি সাগরের পানিতে মিশে যাওয়ায় ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্র অর্থনীতিও দীর্ঘ মেয়াদে হুমকির মুখে পড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বিষয়ে এখনই উদ্যোগ না নিলে অঙ্কুরে বিনষ্ট হতে পারে কুয়াকাটার অপার সম্ভাবনা।

সূর্যদয় ও সূর্যাস্থের বেলা ভূমি হিসেবে পরিচিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত, সাগরের বিশাল জলরাশি আর দৃষ্টিনন্দন ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট দেখতে হাজারও পর্যটক কুয়াকাটা আসেন। তবে সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ রক্ষায় নেই কোনো উদ্যোগ। শহরের যাবতীয় ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সৈকতে। কোনো ধরনের নিয়মনীতি কিংবা প্রাকৃতিক পরিবেশের কথা বিবেচনা না করে সাগর পাড়ে ময়লা আবর্জনা ফেলায় তা স্থানীয় জীব বৈচিত্রের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্লাস্টিক ও আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সাগর তীরে

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের ডিন ড.লোকমান আলী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের যে বিশাল সম্পদ রয়েছে তা রক্ষা করতে সাগরকে সব সময়ে দূষণমুক্ত রাখতে হবে। বর্তমানে সাগর পাড়ে যে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তা সাগরের পানির সঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে প্লাস্টিক ও পলিথিন জাতীয় পদার্থ মাছ এবং অনান্য সামুদ্রিক প্রাণি খেয়ে ফেলছে। এর ফলে এটি জীব বৈচিত্রের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের এখনই সচেতন হতে হবে।' 

এদিকে সমুদ্রসৈকত এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন না হওয়ায় পর্যটকরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। পর্যটন শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়নের তাগিদ দিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পাপড়ী হাজরা। তিনি বলেন, প্রতিটি শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি ডাম্পিং জোন থাকা প্রয়োজন। তবে সেটি অবশ্যই সাগর পাড়ে নয়।

স্থানীয় জীব বৈচিত্রের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব বর্জ্য

সমস্যা সমাধানে কুয়াকাটা পৌর সভার নিজস্ব ডাম্পিং জোন না থাকাকে দায়ী করলেন পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা। ডাম্পিং এলাকার জমি অধিগ্রহণে সরকারের সহযোগিতার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোঃ মতিউল ইসলাম চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেন, দ্রুত সৈকত এলাকা থেকে এসব বর্জ্য সরিয়ে নেয়া হবে এবং নতুন করে যাতে সৈকত এলাকায় ময়লা আবর্জনা না ফেলা হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর