ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে শৌচাগার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী এ কলেজের ১৯ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য শৌচাগার প্রয়োজন ১ হাজার ৯৫০টি। কিন্তু শৌচাগার রয়েছে মাত্র ৪৩টি। এরমধ্যে আবার ৪টি শৌচাগার ব্যবহারের অনুপযোগী। ফলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে শৌচাগার সংকটে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সমস্যা বেশি হচ্ছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজে মোট শৌচাগার আছে ৪৩টি। এরমধ্যে ছাত্রদের জন্য ৩৫টি ও ৭ হাজার ছাত্রীদের জন্য মাত্র ৮টি শৌচাগার রয়েছে। সে হিসেবে প্রতি ৮৭৫ জন শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র ১টি শৌচাগার রয়েছে। তবে শৌচাগারের বাইরে ছাত্রদের প্রসাব করার স্থান রয়েছে ৩২টি। স্নাতক শাখায় ভবন রয়েছে ৭টি। এসব ভবনে তিনটি করে শৌচাগার রয়েছে।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুর ইসলাম বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতি ৫০জন শিক্ষার্থীর জন্য ১টি শৌচাগার থাকা প্রয়োজন। আর প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রতি ১০জনের জন্য ১টি শৌচাগার থাকার বিধান রয়েছে।
কলেজের প্রশাসনিক সূত্র জানায়, কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী শাখা শহরের প্রাণকেন্দ্র ঝিলটুলীতে অবস্থিত। স্নাতক শাখা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দুরে বায়তুল আমান এলাকায় অবস্থিত। এ কলেজ ১৯১৮ সালে স্থাপিত হয়। ১৯৬৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়। বর্তমানে এ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী ছাড়াও ১৯টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করা হয়। কলেজে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৯ হাজার ৫০০ জন। এরমধ্যে ছাত্র ১২ হাজার ৫০০জন ও ছাত্রী রয়েছে ৭ হাজার। ১৮৯টি পদের বিপরীতে কলেজে মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৬৪জন। তবে কলেজে জাতীয় স্যানিটেশন প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) ২০১৮ সালে নির্মিত দুটি কমিউনিটি ল্যান্ট্রিন রয়েছে। এগুলো দিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। তবে এগুলো অধিকাংশ সময় তালা বদ্ধ থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, এই শৌচাগার তাদের কোনো কাজে আসে না। প্রায় সব সময়ই তালাবন্ধ থাকে।
ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্র বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য কোনো শৌচাগার নাই। যা আছে মেয়েদের জন্য। আমাদের দর্শন বিভাগের ভবনে দৌড়াতে হয়। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য শৌচাগার কম রয়েছে বিষয়টি মানতে নারাজ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মোশারফ আলী।
তিনি বলেন, শৌচাগার কোনো সমস্যা নয়। ছাত্রছাত্রীদের শৌচাগার নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। শৌচাগার বন্ধ থাকা বিষয়ে তিনি বলেন, বাইরের লোক যেন যেতে না পারে সেজন্য তালা দিতে হয়।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিষ্ণুপদ ঘোষাল বলেন, রাজেন্দ্র কলেজে শৌচাগার সংকট রয়েছে। সরকারের পাশাপাশি কলেজ কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হবে।