গাইবান্ধার ফরিদপুর ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে মুনছুর আলী (৪৫)। পৈত্রিক বসতভিটা ছাড়া কোনো জমিজমা নেই। নিত্যদিন অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে স্ত্রী ও দুই সন্তানের ভরণ-পোষণ করতেন। নুন আনতে পান্তা ফুরায় দশা ছিল তার।
অন্যের ফসলি জমিতে কাজ করতে করতে বেশ অভিজ্ঞ চাষি হয়ে ওঠেন মুনছুর আলী। ক্ষেতমজুরি নয়, কিভাবে নিজেই ফসল উৎপাদন করা যায় এমন স্বপ্ন দেখতেন তিনি। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পাঁচ বছর আগে প্রতিবেশী মান্নান মিয়ার ২৫ শতক জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন গাজর।
সেই ফসল থেকে লাভের মুখ দেখতে পান মুনছুর আলী। পরবর্তী বছরে গচ্ছিত কিছু টাকা ও গৃহপালিত গরু-ছাগল বিক্রির টাকা দিয়ে নেহাজ উদ্দিনের এক বিঘা জমি বন্ধক নেন। সেই জমিতেও চাষ করেন গাজর। এর পর আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে বন্ধকি জমির পরিমাণ।
মুনছুর আলী জানান, শ্রম বিক্রির পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে গাজর চাষ করে আসছেন। ফসলটি অধিক লাভজনক হওয়ায় এবারেও দুই বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের গাজর আবাদ করেছেন। সম্প্রতি গাজর গাছগুলোতে সবুজ রঙের পাতা বাড়তে শুরু করেছে। গাছের মাটির নিচে ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করেছে সোনালি রঙের গাজর। আর কিছুদিন পরই ক্ষেত থেকে তুলবেন ফসলগুলো।
বার্তা২৪.কমকে মুনছুর আলী জানান, আশ্বিন থেকে কার্তিক মাস বীজ বপনের উত্তম সময়। বীজ গজানোর ৮০ থেকে ৯০ দিন পর গাজর পরিপক্ক হয়। এরপর গাজর তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। বিঘা প্রতি খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বাজার দর ভালো হলে প্রায় ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। বর্তমানে গাজর আবাদ করে মুনছুর আলী তার দারিদ্র্যমুক্তির চেষ্টা করছেন।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, সবজি হিসেবে গাজরের পুষ্টিগুণ অনেক। বাজারে এর চাহিদাও বেশি। ফলে এটি একটি লাভজনক ফসল।