ঝড়, জলোচ্ছ্বাস কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বুকে আগলে রক্ষা করা সবুজ বেষ্টনী এখন হুমকির মুখে। গত কয়েক বছর ধরে সমুদ্র সৈকতের নানা প্রজাতির গাছ মরে যাচ্ছে। তবে কি কারণে এসব গাছ মরে যাচ্ছে, তার প্রকৃত কারণ এখনও অজানা। এ বিষয়ে গবেষণা ও সবুজ বেষ্টনী রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি উপকূলবাসীর।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গড়ে ওঠা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে উপকূলকে রক্ষা করছে, তেমিন এসব গাছ কুয়াকাটার পর্যটন সম্ভাবনাকেও সমৃদ্ধ করেছে। তবে গত কয়েক বছর ধরে সৈকতের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মরে যাচ্ছে। বর্তমানে জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব দিকে সৈকতে এসব মরা গাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে। যা অনেকটাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাক্ষী হিসেবে পর্যটক ও স্থানীয়দের নজর কাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, তাপমাত্রার তারতম্য, গাছের প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবসহ দীর্ঘ মেয়াদী কোনো কারণে এমনটি হতে পারে।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পাঁপড়ি হাজরা বলেন, সত্যিকার অর্থে গাছগুলো মারা যাবার বিষয়টি খুব অল্প সময়ের নয়। এটি একটি দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া। গাছগুলো হয়তো অনেকদিন ধরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়নি, এ কারণে অস্তে আস্তে গাছগুলোর টিস্যু শুকিয়ে গেছে এবং সর্বশেষ মারা গেছে।
গাছগুলোর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে গবেষণা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
বন বিভাগের পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকতা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, গাছের শ্বাসমূল বালুতে ঢেকে যাওয়ার কারণে এসব গাছ মারা যেতে পারে। এ ছাড়া অনেক গাছের বয়স বেশি হওয়ার কারণেও মারা যেতে পারে। তবে গাছ মারা যাবার সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো যাতে এ নিয়ে গবেষণা করে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আমরা এরই মধ্যে চিঠি দিয়েছি। গাছগুলোর মৃত্যুর কারণ জেনে তা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।