কুড়িগ্রামে কৃষি ও বিভিন্ন প্রকার পণ্য আনা-নেয়ার জন্য একমাত্র ভরসা ছিল গরুর গাড়ি। তবে কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী এই গরুর গাড়ি এখন বিলুপ্তির পথে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ৫-৬টি গরুর গাড়ি রয়েছে। আগে কৃষিসহ বিভিন্ন পণ্য আনা-নেয়ার জন্য গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র অবলম্বন। তবে বর্তমানে নানা ধরনের মোটরযান চলাচলের কারণে ধীর গতির এই গাড়িটি আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিক যুগ। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্য বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার, ভ্যান, পিকআপ ভ্যান, ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন গাড়ি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছী ইউনিয়নের প্রবীণ ব্যক্তি মো. শমসের আলী ও দেলোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আগে আমাদের নিজেদেরও গরুর গাড়ি ছিল। সেই গাড়িতে করে কৃষি পণ্য ও হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন মালামাল আনা-নেয়া করা হতো। এখন গরুর গাড়ি তেমন একটা চোখে পড়ে না।’
কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার গাড়িয়াল পাড়া গ্রামের গরুর গাড়ি চালক হবি ও ইসলাম বলেন, ‘অনেক বছর থেকে এই গাড়ি চালাচ্ছি। তাই ছেড়ে দিতে মন চাচ্ছে না। গরুর গাড়ি চালাতে প্রতিদিন খরচ পরে ৭-৮শ টাকা। আর আয় হয় ৫-৬শ টাকা। এ গাড়ি চালিয়ে আসলে সংসার চালানো যায় না।’
কুড়িগ্রাম সম্মেলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বার্তা২৪.কমকে জানান, গরুর গাড়ি এ অঞ্চলের প্রাচীন বাহন। ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাস উদ্দিন এই অঞ্চলে এসে গরুর গাড়িতে করে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছেন। ওই সময় ওকি গাড়িয়াল ভাই/হাঁকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে গানটি গেয়ে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। কালের বিবর্তনে সেই ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি আজ বিলুপ্তির পথে।