চুয়াডাঙ্গা জেলার সম্ভাবনাময় পান চাষে দেখা দিয়েছে পচন আতঙ্ক। শৈতপ্রবাহের কারণে পানের বরজে পানের পাতা ও গোড়া পচে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই জেলায় মাঠের পর মাঠ পানের বরজে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে কৃষকরা নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করলেও পানের এ রোগ দমন করতে পারছেন না। পানের পাতা ও গোড়ায় পচন রোগ দমন করতে না পারলে চলতি বছর পান চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পানচাষিরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোন পরামর্শ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তারা।
কৃষিপ্রধান জেলা চুয়াডাঙ্গার প্রধান অর্থকরী ফসলের মধ্যে পানের অবস্থান দ্বিতীয়। বর্তমানে জেলার ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছে। চলতি বছর প্রতি হেক্টরে প্রায় ১০ মেট্রিক টন হারে ১৭ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন পান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এ জেলার পান দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। তবে কুয়াশা, শিশির আর শৈতপ্রবাহের কারণে পান চাষে এবার লাভবান হওয়া যাবে না, এমনটিই মনে করছেন স্থানীয় পানচাষিরা।
শহরের হাতিকাটা গ্রামের পানচাষি মিরাজ আলী জানান, এ বছর পান চাষে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হবে তার। একটি পানের গোড়ায় পচন ধরলে আশপাশের পানও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তালতলার রহিম শেখ জানান, জেলায় এমন কোন পানের বরজ নেই যেখানে পানের গোড়াপচা রোগ হয়নি। এ সমস্যার কথা শুনে মাঠ পর্যায়ে কৃষি মাঠ কর্মীরা এসে বরজ দেখে চলে যান। কোন পরামর্শ তাদের কাছে থেকে পাওয়া যায় না। সঠিক পরামর্শের অভাবে পানের রোগ-বালাই দমনে সঠিক ব্যবস্থাও নিতে পারছেন না পানচাষিরা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সুফী মো. রফিকুজ্জামান বলেন, কৃষকদের অভিযোগ সঠিক নয়। এটা সত্য যে পরিমাণ কৃষক বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই হারে কৃষি উপ-সহকারী নেই। তবে পানচাষিরা পরামর্শ পেতে কৃষি ক্লাবে গেলে কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সঠিক পরামর্শ পাবেন। পানের পাতা ও গোড়াপচা রোগ দমনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।