নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নিখোঁজের পাঁচদিন পর প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জিসানের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তবে এ ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন নিহত জিসানের স্বজনরা।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান এলাকায় ধলেশ্বরী নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন জিসানের আরেক সহকর্মী প্রকৌশলী লিখন সরকার।
ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র অফিসার মো. কাজল মিয়া জানান, নিখোঁজ দুই প্রকৌশলীর সন্ধানে শুক্রবার সকাল থেকেই বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি অভিযান শুরু করে ডুবুরি দল। এক পর্যায়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকায় ধলেশ্বরী নদী থেকে ডুবন্ত অবস্থায় জিসানের পেটকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে জিসানের লাশ শনাক্ত করেন।
তবে জিসানের স্বজনদের দাবি, নদীতে ডুবে তার মৃত্যু হয়নি। জিসানকে হত্যা করা হয়েছে। জিসানের বড় ভাই শোয়েব আহমেদ বলেন, আমার ভাইয়ের লাশ আমরা অক্ষত পাই নি। তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে, পেট কাটা রয়েছে এবং সেখান দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
এদিকে জিসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর সেখান থেকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ফতুল্লা থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন।
একই সাথে এখনো নিখোঁজ থাকা লিখন সরকারের সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের তল্লাশি অভিযান চলছে। নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, ঘটনার দুইদিন পর খবর পেয়ে আমরা গত তিনদিন যাবত নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়েছে। একজনের লাশ ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছি। নিখোঁজ অপরজনকেও আমরা উদ্ধার না করা পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রাখব।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি দিনগত রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার রাজাপুর এলাকায় বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজের ভেকু মেরামতের কাজ শেষ করে ফেরার পথে নিখোঁজ হন বাংলা ক্যাট কোম্পানির দুই মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জিসান ও লিখন সরকার।
এ ঘটনায় জিসানের স্ত্রী রাকিয়া সুলতানা রাজধানীর আশুলিয়া থানায় বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তবে জিসানের পরিবার শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, এ ঘটনার সাথে ফতুল্লার রাজাপুর এলাকার বুড়িগঙ্গা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সজীব ও তার কর্মচারী পায়েল জড়িত। কারণ হিসেবে বলছেন জিসান ও লিখন নিখোঁজের বিষয়টি সজীব একদিন গোপন রেখেছেন এবং তার সাথে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন সময়ে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেছেন।