বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ফাঁকা জায়গায় বেগুন, কপি, লাউ, শিম, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ নানান জাতের সবজি চাষ হচ্ছে। যে কেউ দেখে এটাকে সবজি ক্ষেত বলেই মনে করবে। স্টেডিয়ামের কর্মচারীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এসব চাষ করছেন।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের পর ক্রিকেটারদের কাছে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রিয় ভেন্যু ছিল বগুড়ার শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম। ক্লাইভ লয়েড, ওয়াসিম আকরাম, মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো সুপারস্টাররাও এই স্টেডিয়ামের প্রশংসা করেছেন। এই ভেন্যুতেই প্রথমবার শক্তিশালী শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও সিরিজ জয়ের রেকর্ড আছে এই স্টেডিয়ামে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলো ২০০৬ সালের ৫ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পর দীর্ঘ ১৪ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে রয়েছে চাঁন্দু স্টেডিয়াম।
২০০৪ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়াম। অল্প সময়েই উন্নতমানের ভেন্যু হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়ে যায় বগুড়া। প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্টেডিয়ামে রয়েছে সবধরনের সুযোগ সুবিধা। দিবা-রাত্রীর ম্যাচ আয়োজনের জন্য ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ফ্লাডলাইট বসানো হয়েছিল।যা এখন বিকল। এখানে রয়েছে ইনডোর সুবিধা। এই স্টেডিয়ামের উইকেট এবং আউটফিল্ডের প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশের সব ক্রিকেটার। উত্তরাঞ্চলের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম হওয়ায় চাঁন্দু স্টেডিয়ামে দর্শকের ঢল নামতো প্রতিটি ম্যাচে।
অথচ দেশের অন্যতম সেরা স্টেডিয়ামটি এখন মৃতপ্রায়। বছরের পর বছর কোন সংস্কার নেই। গ্যালারীর আসনগুলোতে ময়লা জমেছে। পানি জমে মরিচা ধরেছে চেয়ারে। ভিআইপি গ্যালারী এমনকি খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমের জানালার গ্লাসগুলো খসে পড়েছে। স্টেডিয়ামের বাইরের অবস্থা আরও খারাপ।
এদিকে, স্টেডিয়ামের আউট সাইডের ফাঁকা জায়গায় বেগুন, কপি, লাউ, শিম, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচসহ নানান জাতের সবজি চাষ হচ্ছে। যে কেউ স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখে এটাকে সবজি ক্ষেত বলেই মনে করবে। স্টেডিয়ামের কর্মচারীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এসব চাষ করছে বলে জানা গেছে। স্টেডিয়ামের প্রতি বিসিবি কিংবা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নজর না থাকায় ইচ্ছেমত এসব সবজি চাষ হচ্ছে বলে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনের সাথে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তারা অবিলম্বে স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনেরও দাবী জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শহীদ চাঁন্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল বার্তা২৪.কমকে বলেন, কর্মচারীরা শখ করে সবজি চাষ করেছে।এটা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে না, যে কোন সময় সবজি ক্ষেত তুলে দেয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মানের একটি স্টেডিয়ামে ৫ বছর কোনো ইভেন্ট না হলে আন্তর্জাতিক মান বাতিল হয়ে যায়। এখন যদি নতুন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে হয় তাহলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) পরিদর্শনে আসতে হবে, তারা সন্তুষ্ট হলেই আবার কার্যক্রম শুরু করা যাবে।