ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে রংপুরের পীরগাছার বোরো বীজতলার চারা গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে। এতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় আসন্ন বোরো চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
কৃষকেরা জানান, গত ক’দিন আগে বয়ে যাওয়া ঘন কুয়াশা ও তীব্র শৈত্য প্রবাহের কারণে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে বোরো বীজতলার চারা (অঙ্কুরিত চারা গাছ) বর্ধন থেমে গেছে। বীজতলার চারা হলুদ ও ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করে পচে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ওষুধ প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে পীরগাছা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সাড়ে ১৬ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে উপজেলায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে।
রোববার (১২ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার তাম্বুলপুর, কৈকুড়ী, কান্দি ও পীরগাছা সদর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় গত কয়দিনের বয়ে যাওয়া অব্যাহত ঘন কুয়াশা এবং শৈত্য প্রবাহের কারণে বোরো বীজতলার চারা গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অল্প দিনের মধ্যে বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করতে হবে। কিন্তু বীজতলার চারার বৃদ্ধি থমকে আছে। এতে বোরো চাষ নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করলেও বোরো আবাদের দেরি হয়ে যাবে। ফলে ধানের ফলন কম হবে। এতে করে কৃষকেরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মোংলাকুটি গ্রামের কৃষক মাহবুবার রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'বীজতলায় উচ্চ ফলনশীল জাতের হাইব্রিড ও ব্রি-২৮ জাতের বীজ ফেলেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে বীজতলার চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।'
উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের দাদন আব্দুস ছালাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'প্রচণ্ড ঠান্ডা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে ওষুধ প্রয়োগ করেও বীজতলা রক্ষা করা যাচ্ছে না।'
উপজেলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'শীতের হাত থেকে বোরো বীজতলা রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকালে বীজতলার চারা গাছে আটকে থাকা কুয়াশার পানি রশি দিয়ে টেনে ফেলে দিতে হবে। প্রয়োজনে রাতের বেলা বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।'