পটুয়াখালীর দূর্গম উপজেলা রাঙ্গবালীতে শুরু হলো বোট অ্যাম্বুলেন্সের সেবা কার্যক্রম। এর ফলে এই এলাকার মানুষ সহজেই উত্তাল নদী পাড়ি দিয়ে মূল ভূখণ্ডে রোগী নিয়ে এসে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন। এতে করে দূর্গম এসব চরে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইসিডিএল উপকূলের মানুষের জন্য বিনামূল্যে এই অ্যাম্বুলেন্সটি সরবরাহ করেছে।
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গবালী। এই উপজেলায় কয়েকলাখ মানুষের বসবাস। তবে এখানে এখনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা বেসরকারিভাবে আধুনিক কোনো চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। ফলে চিকিৎসার জন্য সবাইকেই মূল ভূখণ্ড গলাচিপা কিংবা কলাপাড়া উপজেলায় যেতে হয়। ইঞ্জিন চালিত নৌকা কিংবা ট্রলারে উত্তাল নদী পাড়ি দিয়ে রোগী পরিবহনে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ফলে পথেই অনেক রোগীকে মৃত্যুবরণ করতে হয়।
রাঙ্গবালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাক্তার জহির উদ্দিন বলেন, ‘নদীবেস্টিত একটি এলাকা হওয়ায় এবং এখানে কোনো হাসপাতাল না থাকায় প্রায়ই রোগী নিয়ে মূলভূখণ্ডে যেতে হয়। যেটি ছিল ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বোট অ্যাম্বুলেন্স চালু হওয়ায় আমাদের এলাকার স্বাস্থ্য সেবায় একটি গুনগত পরিবর্তন ঘটবে।’
এই বোট অ্যাম্বুলেন্স অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তদারকি করবে। গত ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এই বোট অ্যাস্বুলেন্স সেবার উদ্বোধন করা হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আরিফ খাঁন।
বিচ্ছিন্ন এসব দ্বীপ চরেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই উপজেলায় একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মানের উদ্যোগ গ্রহণের কথাও জানান পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন ‘ইতোমধ্যে এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক এই বোট অ্যাম্বুলেন্সটি চালু হওয়ার মাধ্যমে চরবাসীর চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি আরো সহজ হলো।’
আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই বোট অ্যাম্বুলেন্স এমভি পায়রা’য় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরজ্ঞাম সংযুক্ত করা হয়েছে। আর প্রয়োজনীয় তেল খরচ দিয়েই স্বল্প খরচে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা দূর্গম এসব চরের মানুষ বোট অ্যাম্বুলেন্সের সেবা নিতে পারবেন।