তদন্তকারী কর্মকর্তার (আইও) জেরায় জব্দকৃত ৪৩৭ বোতল ফেনসিডিলকে অভিযোগপত্রে ৭৩৪ বোতল লিখেছেন। এতে অপরাধের অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে’ প্রমাণিত না হওয়ায় নাটোরে মাদক মামলার তিন আসামি খালাস পেয়েছেন। তারা হলেন- আব্দুল আলীম, মোহাম্মদ রকি ও রফিকুল ইসলাম।
গত সোমবার (১৩ জানুয়ারি) নাটোরের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দীকী এ রায় দেন। ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের কারণে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শককে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া রায়ের কপি রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি ও নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে রায়ে। একই সঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার বিবরণ পাঠাতেও বলা হয়েছে।’
জানা গেছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর নজরুল ইসলাম বর্তমানে পুলিশের নাটোর সদর সার্কেল অফিসে কর্মরত আছেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০০৯ সালে নাটোর সদরের হুগোলবাড়িয়া এলাকায় একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি মাইক্রোবাস থেকে ৪৩৭ বোতল ফেনসিডিল থেকে মোহাম্মদ রকি নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে র্যাব। এ ঘটনায় র্যাবের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দীন নাটোর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১০ সালের মামলাটির অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর নজরুল ইসলাম। মামলায় দেওয়া ১৬১ ধারার জবানবন্দীতে সাক্ষীরা ৪৩৭ বোতল ফেনসিডিলের কথা উল্লেখ করলেও অভিযোগপত্রে ৭৩৪ বোতল ফেনসিডিলের কথা উল্লেখ করা হয়।
মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দীকী বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলা থেকে আসামিদের বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্য থেকে আলামতের সংখ্যা পরিবর্তন করেছেন। অভিযোগপত্রে আলামতের পরিমাণ নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আসামিরা খালাস পেতে আইনত হকদার।’
মীর নজরুল ইসলাম মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, অভিযোগপত্রের আলামতের সংখ্যার ভুলটি করণিক ভুল এবং অনিচ্ছাকৃত।
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, ‘রায়ের কপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’