শান বাধানো পুকুরঘাট, একসময় রাজা মহারাজা কিংবা গ্রামীণ মোড়লদের বাড়ির সামনে দেখা যেত। এটি তাদের ঐতিহ্যের ধারকও ছিল। গ্রাম কিংবা শহর দুটোতেই এটি ছিল গৌরবের নির্দশন। কিন্তু এখন তা অতীত কাহিনী। যেগুলোও আছে সংস্কারের অভাবে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
পুকুর পাড়ে বসবাসকারীরা ময়লা আবর্জনা ও গোয়াল ঘরের গোবর ফেলায় পানি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মানুষের বসতি স্থাপনে হারিয়ে যাচ্ছে সেসব পুকুর। শহর ও মফস্বল থেকে অনেক আগেই হারিয়ে গেছে সেই ঐতিহ্য।
জানা গেছে, শান বাধানো পুকুরঘাটে পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা মোড়লরা তাদের বিচার কার্য সম্পন্ন করতেন। শীতের মৌসুমে গ্রামীণ সমাজে চায়ের আড্ডা দেখা যেত পুকুরঘাটে। নানা গল্পের ফুলঝুড়িও চলতো সেখানে। বাড়ির খাবারের অন্যতম স্বাদ ছিল পুকুরের তাজা মাছ। কিন্তু আজ ফিশারির মাছই সবার ভরসা। তাও আবার ফরমালিনে সজ্জিত।
সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মফস্বলে কমে গেছে পুকুর। খুঁজে পাওয়া দায় শান বাধানো ঘাট। এখন আর পুকুর ঘাটে রোদ পোহাতে দেখা যায় না। সেসব মুহূর্তগুলো আজ চার দেওয়ালের মাঝেই বন্দি। কারণ মানুষের বসবাস আর ব্যবসায়িক চিন্তাধারায় হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পুকুর ও শান বাধানো ঘাট।
তবে এখনো কিছু কিছু জায়গায় দেখা মিলে সেসব পুকুরঘাটের। যেমন পুরনো জমিদার বাড়ি, গ্রামের ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি কিংবা ঐতিহ্যবাহী বাড়ির সামনে। ঠিক তেমনি একটি পুকুর ঘাট দেখা গেছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগরের দিলশাদপুর গ্রামে। সেখানে আলাউদ্দিন পাটওয়ারী বাড়ির সামনে পুকুরঘাটটিতে একটি পাঞ্জেগানা মসজিদও দেখতে পাওয়া যায়।
স্থানীয় যুবক মোশাররফ হোসেন রুবেল বলেন, এটি অনেক পুরাতন বাড়ি। এখানকার লোকজন গোসলসহ বিভিন্ন কাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করে। আগে অনেকগুলো পুকুর ছিল, এখন কমে গেছে। আর পুকুরঘাটের মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানো হয়। পথচারীদেরও নামাজ পড়তে সুবিধা হয়। সকালে মসজিদের মকতবে শিশু কিশোররা আরবী শিক্ষা গ্রহণ করে। দেখতে বেশ ভালোই লাগে।