চুয়াডাঙ্গায় রেলওয়ের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নামে রেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলার আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে গড়ে ওঠা শত শত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রেলওয়ে কর্মকর্তারা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালালেও বেশ কয়েকটি দোকান না ভেঙে চলে যায়। অনেকেই অভিযোগ করে বলেন উচ্ছেদ অভিযানের কয়েকদিন আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবৈধ দোকানগুলোতে লাল কাঁটা চিহ্ন একে অবৈধ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। আর এতে করে আলমডাঙ্গা রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, জেলার আলমডাঙ্গা রেলস্টেশন সংলগ্ন চারপাশজুড়ে দিনের পর দিন গড়ে ওঠে অবৈধ স্থাপনা। রেলওয়ের এসব জায়গায় কেউ কেউ দীর্ঘদিন ব্যবসা করার সুবাদে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে নিজেদের দখলে নেয়। গত বছরের ডিসেম্বরে এসব স্থাপনাকে অবৈধ ঘোষণা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ জারি করে। বাংলাদেশ পাকশী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব অবৈধ পাকা ও আধপাকা স্থাপনা চিহ্নিত করে লাল রংয়ের কাঁটা চিহ্ন দিয়ে উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়ে নিদিষ্ট সময় বেঁধে দেয়। এর কিছুদিন পরেই হঠাৎ শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। গত ২৯ ডিসেম্বর এসব অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ চালানো হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশী জোনের বিভাগীয় ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন, রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক জালাল উদ্দিন সহ আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে। ওইদিন রেলওয়ের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ ৩০ থেকে ৩৫টি দোকান ঘর ভেঙে দেওয়া হয়।
রেলওয়ের জায়গায় স্থাপনা উচ্ছেদের শিকার মফিজুল জানায়, ষ্টেশনের পাশে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষ মোটা অংকের টাকা যাদের কাছে থেকে নিয়েছে তাদের স্থাপনা ভাঙেনি। ভাঙ্গা হয়েছে গুটিকয়েক দারিদ্র দিন আনা দিন খেটে খাওয়া মানুষের ঘর।
আবুল হাসান নামের এক ব্যবসায়ী জানান, রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ আলমডাঙ্গা ষ্টেশনের পাশে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেবার পর পাকশী রেলওয়ের নুরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এসময় তিনি জমির লীজের কাগজ করার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। যেসব প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মোটা অংকের টাকা দিয়েছে তাদের স্থাপনা ভাঙা হয়নি। অন্যদিকে যারা টাকা দিতে পারেনি সেসব স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়।
এদিকে রেল কর্তৃপক্ষের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে বিতর্কিত বলছে সচেতন মহল। অনেকেই বলছেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাদের স্থাপনাগুলো অবৈধ চিহ্নিত করে গেল উচ্ছেদের সময় তাদের স্থাপনাগুলো কেনো ভাঙা হলো না।
এবিষয়ে রেলওয়ে পাকশী জোনের ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান জানান, অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে টাকা পয়সার কোনো বিষয় নেই। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যারা জমি লিজ নিয়েছে তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়নি। এখনো রেল ষ্টেশনের পাশে অনেক অবৈধ স্থাপনা রয়েছে যা পর্যায়ক্রমে অভিযানের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে।