দখলদারদের কবলে পড়ে হারিয়ে যাওয়া শত বছর আগের নদীগুলোও খুঁজে বের করে উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘নদী রক্ষায় নাগরিক সংলাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সারাদেশের নদ-নদী রক্ষায় জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। চলমান উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে শত বছর আগের নদীগুলো কোথায় ছিল তা বের করে ফেলব। স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের বিজ্ঞানীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কোথায় কোথায় নদী ছিল তা বের করে ফেলবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরইমধ্যে আমরা সারাদেশের ৪৯ হাজার ১৬২ জন অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করেছি। আগামী এক বছরের মধ্যে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো জেলা প্রশাসন উচ্ছেদে ব্যর্থ হন তাহলে তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে।’
মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘নদী রক্ষা কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হাইকোর্টকে আহ্বান জানানো হয়েছে। যদি আমাদেরকে আরও শক্তিশালী করা হয় তাহলে আমরা ডিসিদের জন্য অপেক্ষা করব না। নিজেরাই সারাদেশে উচ্ছেদ অভিযানে নামব।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চতুর প্রভাবশালী রয়েছে, যারা প্রথমে নদীর পাড়ে হত দরিদ্রদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন। পরে সময়-সুযোগ বুঝে বিভিন্নভাবে তারা ওই জায়গাটি দখল করে নেন। সুতরাং সে বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। দরিদ্র ভূমিহীনদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন তারা নদী দখল করে বসবাস করবেন। তাদের সঠিক তালিকা সংগ্রহ করে অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।’
নাগরিক সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসন অমিতাব পরাগ তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈলেন চাকমা, জেলা পানি উন্নয় বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএম সৌকত।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেলের পরিচালনায় সংলাপে নদী রক্ষায় নিজেদের পরামর্শ তুলে ধরেন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে তিনি খোয়াই নদীর বিভিন্ন অংশ পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন। এ সময় বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।