দাম চড়া থাকায় পেঁয়াজ আবাদের দিকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন মেহেরপুর জেলার কৃষকরা। বাণিজ্যিকভাবে ও পরিবারের চাহিদা মেটাতে অনেকে পেঁয়াজ আবাদে নেমেছেন। তবে পেঁয়াজের চারার অস্বাভাবিক দামে চাষিদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। চারা সংকট থাকায় দাম বেশি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
মেহেরপুর শহরের তহবাজার, গাংনী বাস স্ট্যান্ড ও বামন্দী হাটে সপ্তাহের দুই দিন বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজের চারা। স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজের চারা উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। চাহিদা পূরণে আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে পেঁয়াজের চারা সরবরাহ করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি কেজি পেঁয়াজ চারা ৩০-৪৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
বাঁশবাড়ীয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষি বাবলু রহমান বলেন, ‘গেল তিন বছর পেঁয়াজের দাম কম ছিল। তাই এবার চাষিদের ঘরে পেঁয়াজের বীজ ছিল না। দাম বেশি দেখে অনেকেই এখন আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। এক কাঠা জমিতে ১২-১৫ কেজি পেঁয়াজ চারা প্রয়োজন। এত দাম দিয়ে চারা কিনে পেঁয়াজ তৈরি করার পর চাষিরা আবারও লোকসানের মুখে পড়বেন।’
মেহেরপুর শহরের ফুলবাগানপাড়ার কৃষক সামসুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য দুই কাঠা জমিতে পেঁয়াজ লাগাচ্ছি। চারার দাম বেশি থাকায় আবাদের পরিমাণ বাড়ানো যাচ্ছে না।’
গাংনী বাজারে পেঁয়াজের চারা কিনতে আসা কুষ্টিয়ার খলিশাকুন্ডির মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পেঁয়াজ তোলার ভরা মৌসুমেও দাম অনেক বেশি। তাই পরিবারের চাহিদা কথা মাথায় রেখে বাড়ির আশেপাশে পেঁয়াজ লাগানোর জন্য চারা কিনতে এসেছি। কিন্তু গেল বছরের চেয়ে এবার চারার দাম অনেক বেশি।’
পেঁয়াজ চারা ব্যবসায়ী ষোলটাকা গ্রামের সোয়েব আলী বলেন, ‘বাড়তি দরে পেঁয়াজের বীজ কেনা ও বৃষ্টি এবং কুয়াশায় পেঁয়াজের চারা বিনষ্ট হয়েছে অনেক জেলায়। এতে চারা সংকট দেখা দিয়েছে।’
গাংনী বাজারের আরেক পেঁয়াজ চারা ব্যবসায়ী রফাতুল্লাহ বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক কষ্টে চারা সংগ্রহ করা হচ্ছে। চারা ক্রয় ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বিক্রিতে গিয়ে প্রভাব পড়ছে।’
বাজার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৯ জানুয়ারি) মেহেরপরের বিভিন্ন পাইকারি কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে যা বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি।