মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল বনবিটে বন কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি বন থেকে অবৈধভাবে গাছ কেটে চলছে বিক্রয়।
বিগত কয়েক বছর ধরে এসব গাছ কাটার ঘটনা ঘটলেও কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে এই নিধনযজ্ঞ। এই বনবিট থেকে নানা প্রজাতির গাছ কাটা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, এই গাছ কাটার নিধনযজ্ঞে যুক্ত রয়েছেন বরমচাল বনবিটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আহমদ আলী। তার সহযোগিতায় টিলা থেকে কয়েক সপ্তাহ ধরে গাছ কাটা হচ্ছে।
জানা গেছে, এই গাছগুলো ক্রয় করছেন উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আহাদ ও বরমচাল ইউনিয়নের সিঙ্গুর গ্রামের আব্দুল হাসিম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি বন কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে অবহিত করলেও রহস্যজনক কারণে তারা এ বিষয়ে কোন কর্ণপাত করেননি। এছাড়াও বিষয়টি আমলে না নিয়ে উল্টো গাছ কাটার বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে অস্বীকার করছেন বরমচাল বিটের কর্মকর্তা আহমদ আলী।
রোববার সরেজমিন দেখা গেছে, বরমচাল বনবিটের পশ্চিম সিঙ্গুর এলাকায় প্রায় ১৫-২০ একর জায়গা জুড়ে কয়েকটি টিলায় ৮-১০ বছর বয়সী আকাশী, বেলজিয়ামসহ নানা প্রজাতির মূল্যবান গাছ অবাধে কাটা হচ্ছে। একটি টিলার সবক’টি গাছ কেটে তা গাড়ি দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলেও গাছের গোড়ার অংশ ও ডালপালার চিহ্ন এখনো পড়ে আছে। আরেকটি টিলায় গাছ কাটা হচ্ছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে কর্তনকর্মীরা টিলা থেকে কৌশলে অন্যত্র সরে পড়ে। এসময় দেখা যায় ওই টিলায় প্রায় শতাধিক গাছ কেটে তা স্তূপ করে রাখা হয়েছে এবং আরও শতাধিক গাছ কাটা অবস্থায় টিলায় পড়ে আছে। ছবি তোলার সময় দেখা হয় সফর আলী নামে এক প্রহরীর সঙ্গে।
তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক সময় থেকে তিনি বনের গাছগুলো পাহারা দিচ্ছেন। কেন পাহারা দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা গাছ ক্রয় করে নিচ্ছেন তারা তাকে দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরি দিয়ে রেখেছেন।
গাড়ি দিয়ে গাছ অন্যত্র নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আজ (সোমবার) একটি ট্রাকে বন কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নেয়া হয়েছে।
বরমচাল বিটের বন কর্মকর্তা (ফরেস্টার) আহমদ আলী তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি সরেজমিনে গিয়ে তাদের বাধা দেই এবং কিছু গাছ জব্দ করি। তবে ট্রাক বোঝাই সেই গাছগুলো এবং বনবিট কর্মকর্তাকে বরমচাল বনবিট অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি।
বন বিভাগের কুলাউড়ার রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমি সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সিলেট বনবিভাগ কার্যালয়ের উপ বন সংরক্ষক এস এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।