কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার হিসনা নদী গিলে খাচ্ছে অবৈধ দখলদারেরা। দুই তীর দখল করে গড়ে উঠেছে পাকা-আধাপাকা ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা। শুধু তাই নয় দখলদাররা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন।
পানি কমে যাওয়ায় নদীর তীরে বসবাসকারী কোথাও কোথাও তামাক চাষ করছেন। এসব ক্ষেতে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে নদীতে মাছসহ বিভিন্ন জলজপ্রাণির বংশবিস্তার ব্যাহত হয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ না থাকায় নদীর বেঁচে থাকা হুমকির মধ্যে রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হলেও উচ্ছেদে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীদের নাম থাকায় উচ্ছেদ অভিযানে তোড়জোড় নেই স্থানীয় প্রশাসনের।
উপজেলার পূর্ব সাতবাড়িয়া গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল আলিম বলেন, যে নদী ছিল একসময় পূর্ণ যৌবনা, যার বুক চিরে চলতো বড় বড় লঞ্চ-টলার। অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে উঠতে চলতো ছোট-বড় নৌযান। সেসব এখন ইতিহাস। নতুন প্রজন্মের কাছে অবিশ্বাস্য গল্প। নদীটি এখন ছোটদের খেলার মাঠ, পশুর চারণভূমি আর কৃষকের ধান চাষের ক্ষেতে পরিণত হয়েছে।
ভেড়ামারার চন্ডিপুর চাঁদগ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী বলেন, নদী মরে যাওয়ায় জলপথের সব যোগাযোগ বন্ধ। এই কাঠেরপুলে হিসনা নদীতে বড় বড় নৌকা ভিড়তো। আমরা যাতায়াত করতাম। কিন্তু নদীটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। এই হিসনা নদী ভেড়ামারার ঐতিহ্য। নদীটির পূর্বরূপ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল মারুফ বলেন, হিসনা নদী দখল ও খননের বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নদী রক্ষা কমিশনকে জানানো হয়েছে। এছাড়াও অবৈধ দখলদারের তালিকা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে নদী উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে।