সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য কলেজে নেই কোন ছাত্রাবাস। এতে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আসা অনেক শিক্ষার্থীই নিয়মিত কলেজে আসতে পারছেন না। যেসব শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তারা শহরের আবাসিক হোস্টেলে থাকছেন।
আবার অনেক শিক্ষার্থীকে মেস ভাড়া জোগাড় করতে প্রাইভেট টিউশনি ও পার্ট টাইম চাকরি করতে হচ্ছে। ছাত্রাবাসের অভাবে কলেজের শত শত শিক্ষার্থীকে দূর-দূরান্ত থেকে হেঁটে কিংবা মেসে থেকে লেখাপড়া করতে হয়। এতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্ররা শহরের রিফাত ম্যানশন, আফরোজ আলী বোর্ডিং, সেলিম বোর্ডিং, খাইরুন নেছা বোর্ডিং, আরফিন নগর মসজিদ বোর্ডিংসহ শহরের বিভিন্ন বোর্ডিংয়ে থাকছেন। অনেকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বাসা ভাড়া নিয়ে রয়েছেন।
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে জেলার এগারো উপজেলা থেকে উচ্চ শিক্ষা নিতে আসা শিক্ষার্থীরা বেশির ভাগ অস্বচ্ছল পরিবারের সদস্য। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে টিউশন বা পার্টটাইম চাকরি করেই খরচ চালাতে হয়।
মিজান হোসাইন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বিতরণের জন্য নয় বরং জ্ঞান তৈরির একটি উর্বর জায়গা। সে পরিবেশ সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ তৈরি করতে পারেনি। এখানকার অনেক শিক্ষার্থীকে নিজের পড়াশুনার সময়টা টিউশন করে ব্যয় করতে হয়। নয়ত মেস ভাড়া দিতে পারেন না তারা।
আফরোজ আলী বোর্ডিংয়ে থাকা সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলফাজ আহমদ বলেন, এখন জানুয়ারি মাস। নতুন অনেক শিক্ষার্থী মেস খুঁজে এখানে এসেছেন। কিন্তু সিট খালি নেই। শহরের কোনো বোর্ডিংয়েই এখন সিট খালি নেই।
সেলিম বোর্ডিংয়ে মেস করে থাকা শিক্ষার্থী লোকমান বাদশা ও তৈয়বুর রহমান বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে এই বোডিংয়ে মেস করে রয়েছি। এখানে পরিবেশও ভালো না। ছাত্রসহ চাকরিজীবী সবাই থাকে এখানে।
আরফিন নগর মসজিদ বোর্ডিংয়ে থাকা শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন বলেন, রুম ভাড়াই জন প্রতি ১১শ’ টাকা করে দিচ্ছি। কলেজ যেতে লাগে ২০ টাকা, আসতে ২০ টাকা। এলাকাও সুবিধার নয়। নিজেই রান্না করতে হয়। টিউশন ও রান্নাতেই সব সময় চলে যায়। পড়াশুনার সময় পাওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের দুর্ভোগের কথা আমরা অবগত রয়েছি। ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান মহোদয়ের কাছে ২টি ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করেছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের ইচ্ছা ৫ তলা বিশিষ্ট ২টি ছাত্রাবাস নির্মাণ করা। একটি হবে কৃষ্ণচন্দ্র স্মৃতি ছাত্রাবাস (হিন্দু ছাত্রাবাস) এর জায়গায়। আরেকটির জায়গা এখনও নির্ধারণ হয়নি।