রংপুরের পীরগাছা থানায় মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের প্রায় শতাধিক জব্দ করা যানবাহন বছরের পর বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। জায়গা না থাকায় থানা ভবনের ভেতরে শোভা বর্ধনের জন্য তৈরি করা ফুল বাগানে রাখা হয়েছে যানবাহনগুলো।
দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় একই স্থানে পড়ে থাকায় অনেক যানবাহন নষ্ট হয়ে গেছে। রোদ, বৃষ্টি ও ধুলায় এসব গাড়ির যন্ত্রাংশে মরিচা ধরেছে। হারাচ্ছে ব্যবহার উপযোগিতা। আইনি জটিলতার কারণে এসব গাড়ি নিলামে বিক্রি করতে না পারায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মামলার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আলামত হিসেবে যানবাহন আটকে রাখা হয়। আদালতের নির্দেশে কিছু যানবাহন মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপেক্ষা করতে হয় মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত। চোরাই পথে দেশে আসা, নিবন্ধনহীন কিংবা অপরাধ সংশ্লিষ্টতায় জব্দ করা হয়েছে অনেক গাড়ি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লতাপাতা ও ময়লা-আবর্জনায় গাড়িগুলো ঢেকে আছে। কোনোটির সিট নেই, লাইট নেই, নম্বর প্লেট আছে তো গ্লাস নেই, আবার কোনোটির শুধু বডি পড়ে আছে। বেশির ভাগ গাড়ি মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো এতটাই বেহাল ও ভাঙাচোরা যে বিক্রির অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বছরের পর বছর ধরে গাড়িগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হলেও এসব গাড়ি রক্ষায় নেয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, মামলা-হামলা, সড়ক দুর্ঘটনা, মাদক ও অবৈধ মালামাল বহনসহ নানা অভিযোগে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি জব্দ করে পুলিশ। এসব ঘটনায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খোলা আকাশের নিচে রোদ, বৃষ্টি ও ধুলাবালিতে অযত্নে পড়ে থাকে জব্দ করা গাড়িগুলো। থানার ভেতরে শোভা বর্ধনের জন্য একটি বাগান তৈরি করা হয়েছিল। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বর্তমানে বাগানটিতে যত্রতত্র গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। থানার ভেতরে এভাবে গাড়িগুলো পড়ে থাকায় বিষয়টি দৃষ্টিকটু লাগে। এতে পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। সব মিলিয়ে গাড়িগুলো এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বার্তা২৪.কমকে জানান, জব্দ করা যানবাহন রাখার জন্য থানায় নির্দিষ্ট কোনো গ্যারেজ নেই। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে রাখতে হয়। আইনি জটিলতার কারণে জব্দ করা গাড়ির সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ। এগুলো রাখার জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা থাকলে গাড়িগুলো তেমন নষ্ট হতো না।