২০০৪ সালে স্বামী ইমামুল হোসেন সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। ওই দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও একটি পা তাকে হারাতে হয়েছে। টানাপোড়েনের সংসারে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছিলেন স্ত্রী সাজেদা বেগম।
তখন অবলম্বন হিসেবে জারবেরা ফুল চাষ করার সিদ্ধান্ত নিলেন সাজেদা বেগম। সততা ও কঠোর পরিশ্রমে আজ সফল উদ্যোক্তা তিনি। জারবেরা ফুল চাষ করে ভাগ্য বদলে গেছে তার।
বর্তমানে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি-পানিসারার ফুলচাষি বলতে সাজেদা বেগমকে অনেকেই চেনেন। ফুল চাষ করে পানিসারা মোড়ে ১৫ শতক জমির উপর সীমানা প্রাচীর দিয়ে নির্মাণ করেছেন পাকা বসতবাড়ি। জমি কিনেছেন আরও পাঁচ বিঘা। এক বিঘায় গোলাপ, তিন বিঘায় জারবেরা ও গাঁদা ফুল চাষ করা হয়েছে। এছাড়া দুই বিঘা জমিতে ধান, সরিষা চাষ করেছেন তিনি। এক মেয়েকে ও এক ছেলেকে পড়াচ্ছেন যশোরের সরকারি কলেজে। এই সবকিছু নিয়েই সাজেদার সংসার। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেক নারী-পুরুষ ফুল চাষে উৎসাহী হয়েছেন।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে কথা হয় সাজেদার সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রথমে অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করেন। বর্তমানে তার ফুলের জমিতে দৈনিক পাঁচজন শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বাগান থেকে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থানে পাইকারদের ফুল সরবরাহ করছেন। লাভ ভালোই হচ্ছে। আগামী মৌসুমে আরও তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার দিপঙ্কর দাস বার্তা২৪.কমকে জানান, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। ফুল চাষের জন্য পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও যেন এগিয়ে আসে সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আগে এই অঞ্চলে শতকরা ১০ ভাগ নারী ফুল চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে শতকরা ৩০ ভাগে পৌঁছেছে। এসব নারী ফুল চাষিদের ব্যাংক ঋণ সহজ করলে ও ফুল সহজে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করতে নানা পদক্ষেপ নিলে আরও উদ্যোক্তা বাড়বে।