যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল ইউনিয়নের নারানপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে এলাচ চাষ শুরু করেছেন দেশের প্রথম এলাচ চাষি হিসেবে পরিচিত শাহাজান আলী। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের একমাত্র এলাচ চাষি হিসেবে সুপরিচিত। চার বছর আগে ইউটিউব দেখে এলাচ চাষের পদ্ধতি শিখেছিলেন তিনি।
এরপর আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি শাহাজানকে। এই দীর্ঘ চার বছরে অনেক বাধা বিপত্তি এলেও হাল ছাড়েননি তিনি। এতদিনের পরিশ্রমের ফলে এখন তার জমিতে শোভা পাচ্ছে এলাচ।
জানা যায়, এলাচ চাষের জন্য আলাদা কোনো জমি দরকার হয় না। যে কোনো ছায়াযুক্ত স্থানে এই চাষ করা হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া এলাচ চাসের জন্য বেশ উপযোগী।
চাষি শাহাজান বর্তমানে এক একর জমিতে চাষ শুরু করেছেন। এ বছর প্রায় দেড় লাখ বীজ বপন করা হয়। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এগুলো চারায় রূপান্তর হবে।
কয়েক মাসের মধ্যে এই বীজগুলো পূর্নাঙ্গ চারায় পরিণত হবে। আগামী বছর ৬ একর জমিতে তিনি চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন। চাষি শাহাজানের চিন্তা ভাবনা তিনি দেশজুড়ে এ চাষ ছড়িয়ে দেবেন।
দেশের একমাত্র এই বাণিজ্যিক এলাচ চাষি শাহাজান বলেন, ২০১৬ সালে প্রথমে ইউটিউব থেকে এলাচ চাষের পদ্ধতি শিখি। একটা চারা কমপক্ষে ৩০ বছর পর্যন্ত ফল দেয়। এলাচ খুব লাভজনক চাষ। প্রতি একর জমিতে ১২শ চারা রোপণ করা যাবে। যা থেকে এককালীন প্রায় ১৫ লাখ টাকার এলাচ বিক্রয় করা সম্ভব। যা অন্য কোনো চাষে এত লাভ আসবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি আমার এই এলাচ দেশের চাহিদা মিটিয়ে একদিন বিদেশেও রফতানি হবে।’
এলাচ বাগানের শ্রমিকরা জানায়, গ্রামে এলাচ চাষ হওয়ায় অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসে এ বাগান দেখতে।
এলাচ চারা ক্রেতা রাজশাহীর আসাদুল্লা আল গালিব জানান, তিনি তার এলাকায় এলাচ চাষ করার জন্য শাহাজানের বাগান থেকে চারা কিনেছেন। এটা উন্নত জাতের সবুজ এলাচ।
বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রহমান বলেন, এ চাষের কারণে গ্রামটির নাম খুব সহজে ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, শাহাজান দেশের প্রথম এলাচ চাষি। ইতোমধ্যে শাহাজানের এলাচ বাগান তিনি পরিদর্শন করেছেন। মসলা গবেষকরাও কয়েকবার এসেছেন তার বাগানে। গাছে এলাচ এসেছে। সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও তাকে দেওয়া হয়েছে।