ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি আলম মিয়ার (৩৮) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রিয়জনকে হারিয়ে দিশেহারা তার পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী, সন্তানের কান্নায় বাড়ির পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। ছয় মাস আগে রোজগারের আশায় ওমানে যান আলম। লাশ হয়ে দেশে আসবেন এমনটা কোনোদিন ভাবেননি স্ত্রী নাসিমা বেগম।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলিয়া গ্রামের বাজারটিলার বাসিন্দা মৃত বাজিদ মিয়ার ছেলে আলম মিয়া। তার এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তার অকাল মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে গেছে গোটা পরিবার।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) আলমের বাড়িতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। গোটা পরিবারে চলছে কান্নার রোল। গ্রামবাসী তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না। স্ত্রীর কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। প্রতিবেশীরা এসে তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।
নিহতের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, এই দুর্ঘটনা আমার সংসার জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। ধার-দেনা করে আমার স্বামী বিদেশে গিয়েছিলেন। পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে। এখন এই ধার-দেনা কীভাবে পরিশোধ করবো? কী হবে আমার সন্তানদের, কে করবে ওদের ভরণ-পোষণ?
নিহতের ছোট ভাই ওয়াসিম মিয়া বলেন, আমার বড় ভাই পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিরে আনার আশায় বাড়ীতে স্ত্রী ও ২ সন্তানকে রেখে ধার-দেনা করে ৬ মাস পূর্বে ওমানে পাড়ি দেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। পরিবারের সচ্ছলতার জায়গায় আজ পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক বাদশা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মৃত আলমের লাশ যাতে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেলে ওমানের রাজধানী মাসকাট থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দূরে আদম মহাসড়ক দিয়ে কর্মস্থল থেকে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন ৭-৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিক। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা যান। নিহতদের একজন আলম মিয়া।