লোকসানের শঙ্কা নিয়ে বোরো চাষ শুরু করেছেন বগুড়ার কৃষকেরা। তবে লোকসান পুষিয়ে নিতে তারা জমি ফেলে না রেখে ধানের পশাপাশি বিভিন্ন ফসলের চাষ করছেন।
বগুড়া অঞ্চলে প্রতি বছরই বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষক বোরো চাষ একেবারে ছেড়ে দিচ্ছেন না। এবছরও বোরো মৌসুমের শুরুতেই মাঠে নেমে পড়েছেন তারা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ জমি তৈরি করছেন আবার কেউবা চারা রোপনে ব্যস্ত। তবে বগুড়ার গাবতলী, সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায় আগাম বোরো চাষ শুরু হয়েছে আরো এক সপ্তাহ আগে থেকে। পশ্চিম বগুড়ার মাঠ জুড়ে আলু, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল থাকায় ওই অঞ্চলে বোরো চাষ শুরু হবে আরো দুই সপ্তাহ পরে।
গাবতলী উপজেলার সোন্ধাবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ ও আব্দুল আলীম বার্তা২৪.কমকে বলেন, গতবছর বোরো চাষ করে লোকসান হয়েছে। তারপরেও জমি ফেলে না রেখে এবছর বোরো চাষ শুরু করেছি।
তারা বলেন, সার, বীজ ও কীটনাশ সহজলভ্য হলেও কাটা মাড়াইয়ের সময় খরচ বেশি হওয়ায় তাদেরকে লোকসানের মুখে পড়তে হয়।
জয়ভোগা গ্রামের কৃষক দেলওয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বোরো চাষে খরচ উঠছে না। তারপরেও এবছর চাষ করছি। তানাহলে ভাত খাওয়ার জন্য আবার চাল কিনতে হবে।
কৃষি বিভাগ সূত্র বলছে, কৃষকের লোকসান হলেও তারা ধান চাষ ছেড়ে দিচ্ছেন না। বিকল্প ফসল হিসেবে আলু, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে লোকসান পুষিয়ে নিচ্ছেন। প্রতি বছরই কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বোরো চাষ করা হচ্ছে। গত বছর জেলার ১২ উপজেলায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৭৮১ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ করা হয়েছিল ১ লাখ ৮৮ হাজার ১শ’ হেক্টর জমিতে। বাম্পার ফলন হওয়ায় গত বছর ধান উৎপাদন হয়েছিল ৭ লাখ ৭০ হাজার ৫৮১ মেট্রিক টন। এবছর ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬শ' হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।
বগুড়ার আঞ্চলিক কৃষি অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজিজার রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বোরো চাষের সময় ১৫ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত। তবে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে কৃষক চারা রোপন শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বগুড়া সদর এবং শিবগঞ্জ উপজেলা ছাড়া বাদ বাকি ১০ উপজেলায় ধান বেশি চাষ হয়। জেলায় ব্রি-২৮, ২৯, ৫৮, মিনিকেট, জিরা শাইল, কাটারিভোগ, সুবর্ণলতা জাতের ধান উৎপাদন করা হয়।