সম্প্রতি রাজবাড়ীর খানখানাপুর বড় ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় মাহিন্দ্রার সাত যাত্রীর মধ্যে পাঁচ যাত্রীই মারা যান। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান দুই যাত্রী। তাদের মধ্যে একজন শহিদুল ইসলাম। প্রাণে বেঁচে গেলেও মারাত্মকভাবে আহত হন তিনি। তার দুই হাত ও বাম পা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
তার সুচিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছে না পরিবার। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১১৫ নং ওয়ার্ডের ৪৩ নং কেবিনের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন শহিদুল। তিনি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারি কলেজের শিক্ষক।
আহত শহিদুলের ছেলে আসিফ মাহমুদ জায়িদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি ঢাকা সিটি কলেজে কম্পিউটার বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগে তৃতীয় বর্ষ এবং আমার বোন সিদরাতুল মুন তাহা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। প্রতি মাসে আমাদের পড়ালেখার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। এ টাকাগুলো আমার বাবা দিতেন। কিন্তু আজ প্রায় একমাস ধরে বাবা অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন। তার পেছনেও আমাদের অনেক টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন আমরা তার চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছি না।’
গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আহত শহিদুলকে দেখতে আমি ঢাকা গিয়েছিলাম। তাকে যদি দ্রুত অপারেশন করা না হয় তাহলে তার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হবে। কিন্তু অপারেশন ও পরবর্তী চিকিৎসার খরচ খুবই ব্যয়বহুল। একজন শিক্ষক কতো টাকা বেতন পায়? সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পর আবার দুই ছেলে-মেয়েকে ঢাকায় রেখে পড়ানো খুবই কষ্টের বিষয়। এরই মধ্যে আমরা কলেজ থেকে সামান্য কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি। কিন্তু তার চিকিৎসার জন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রফেসর ডা. শাহ আলম বার্তা২৪.কমকে জানান, শহিদুল দুই হাত এবং বাম পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। দ্রুত অপারেশন করা জরুরি।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি ঢাকার উদ্দেশে বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসে গ্রিনলাইনের একটি বাস। পথিমধ্যে বাসটি ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চর খানখানাপুর এলাকার বড় ব্রিজের কাছে একটি ট্রাককে ওভারটেক করতে যায়। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে আসা রাজবাড়ীগামী একটি মাহিন্দ্রাকে ধাক্কা দেয় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলে মাহিন্দ্রার ৭ যাত্রীর মধ্যে মা-মেয়েসহ ৫ জন নিহত হয়।