করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বেনাপোল স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে আগত পাসপোর্ট যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফেলে বাড়তি আয়ের জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের পাসপোর্ট ফরম লেখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাত্রীরা বলছেন, স্বাস্থ্য কর্মীরা ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা তদারকির ব্যবস্থা না থাকায় এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
এদিকে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে দায়সারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলা হলেও অনেকে বলছেন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে না। রেলে কলকাতাগামী যাত্রীদেরও শুরু হয়নি স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এতে ভাইরাসটি ছাড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) ইমিগ্রেশন ভবন ঘুরে দেখা যায়, থার্মাল স্ক্যানার মেশিনটির মনিটর এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। স্ক্যানার মেশিনটির সামনে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণে সব সময় স্বাস্থ্য কর্মীদের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও সেখানে কেউ নাই। স্বাস্থ্য কর্মীরা তাদের কাজ বাদ দিয়ে বাড়তি আয়ের জন্য যাত্রীদের পাসপোর্ট ফরম পূরণ করছেন। এতে অনেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে বাদ পড়ছেন। বন্দরের পণ্য প্রবেশ দ্বারে গিয়ে দেখা মেলেনি কোন স্বাস্থ্য কর্মীর। ভারতীয় ট্রাক চালকরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করেই বন্দরে প্রবেশ করছেন।
আমদানি পণ্য প্রবেশ দ্বার বাংলাদেশ গেটে কর্মরত বন্দরের ওয়ারহাউজ সুপারেন্টেন্ড রাজিব জানান, স্বাস্থ্য কর্মীরা কিছুক্ষণ আগে ছিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ করছিলেন এখন অন্য কোথাও গেছেন। সবাই পরীক্ষার আওতায় আসছেনা কেন জানতে চাইলে বলেন, বিষয়টি দেখার দায়িত্ব স্বাস্থ্য কর্মীদের।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, বন্দরের সব প্রবেশ দ্বারে যাতে দেশ বিদেশি যাত্রী ও ভারতীয় ট্রাক চালকদের নিয়মতি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় তার জন্য স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
দায়সারা স্বাস্থ্য সেবা আর স্বাস্থ্য কর্মীদের পাসপোর্ট ফরম লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে পারেন।
উল্লেখ্য, ভ্রমণ, চিকিৎসা ও বাণিজ্যিক কাজে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করে থাকে। গত ১৭ জানুয়ারি থেকে এপথে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে দাবী তাদের। এসব যাত্রীদের মধ্যে ১২ শতাংশ রয়েছে বিদেশি যাত্রী।
গত ১৫ জানুয়ারি চীনে প্রথম এই করোনা ভাইরাসটি দেখা দেয়। বর্তমানে ২৪ টি দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে প্রায় সাড়ে ৭২২ জনের কাছাকাছি।