বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যায়নত ২২ ছাত্রের চুল কেটে বরখাস্ত হয়েছেন নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের জমি বন্ধক রেখে টাকা আত্মসাৎ, অবৈধভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল আদায়, বিদ্যালয়ে নিয়মিত না আসাসহ নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ তদন্ত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার (ভারপ্রাপ্ত) দেয়া হয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক রতন কুমার সরকারকে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আনোয়ার পারভেজ অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
জানা যায়, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাৎসরিক শিক্ষা সফরে যাওয়ার দিন ধার্য ছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। তবে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী শিক্ষাসফরে যাওয়ার জন্য ছাত্রদেরকে চুল ছোট করে কাটার নির্দেশ দেন। শিক্ষা সফরের আগের দিন রোববার তিনি বিদ্যালয়ে এসে দেখেন অনেক ছাত্রই চুল ছোট করেনি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন শ্রেণির ২২ ছাত্রকে ধরে এনে পর্যায়ক্রমে নিজ হাতেই কাচি দিয়ে চুল ছেঁটে দেন।
এ সংবাদ অভিভাবকরা জানতে পেরে বিদ্যালয়ে ছুটে আসেন ও প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় তারা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দীলিপ কুমার দাসসহ পুলিশ সদস্যরা বিদ্যালয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে ইউএনও ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফ ঘটনাস্থলে এসে প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
ছাত্রদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মেনে তারা বাড়ি ফিরে চুল ছোট করতে চেয়েছিল। রোববার ক্লাসের শুরুতে প্রধান শিক্ষক চুল না কাটায় বকাঝকা করেন এবং পিয়নকে দিয়ে কাঁচি আনিয়ে নিজেই চুল কাটা শুরু করেন। প্রধান শিক্ষক কারো মাথার পুরো চুল, কারো একপাশের বা কারো সামনের চুল কেটে দেন।
বড়াইগ্রাম উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি কোনো ছাত্রদের জোরপূর্বক চুল কেটে দিতে পারেন না। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ইউএনও আনোয়ার পারভেজ জানান, প্রদান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।