নদীর এপারে স্কুল, ওপারের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসে শতশত শিক্ষার্থী। ৫০ বছরে নদীতে হয়নি কোনো সেতু। তাই ভরসা একমাত্র বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকো পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসে শিক্ষার্থীরা। ঝুঁকি নিয়ে আসতে হয় বলে স্কুলে উপস্থিতিও কম।
তুলসীগঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে পূর্ব তীরে ১৯৭০ সালে স্থাপিত জয়পুরহাট সদর উপজেলার মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পূর্ব আর পশ্চিম দিকের ১৫টি গ্রাম (আমদই ইউনিয়নের মুরারীপুর, পাইকর, রাংতা, গোপালপুর, ঘোনাপাড়া, সুন্দরপুর, পুরানাপৈল ইউনিয়নের পাইকপাড়া, গোবিন্দপুর ও গঙ্গা দাশপুর) থেকে আসে বিভিন্ন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী।
আমদই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু ও পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত জানান, এই ১৫টি গ্রামে প্রায় ১৬ হাজার মানুষের বাস। নদীতে সেতু না থাকায় সবচেয়ে বেকায়দায় পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। রাতে এসব গ্রামের মানুষের পক্ষে জরুরি যোগাযোগ দুরূহ হয়ে পড়ে।
মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুরভী আক্তার বলে, বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্কুলে আসতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। পা পিছলে পড়ে বই-খাতা ভিজে যায়। বর্ষার সময় অনেকেই স্কুলে আসতে পারে না।
চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারজানা, পঞ্চম শ্রেণির শফিকুল ইসলামসহ অনেক শিক্ষার্থী তাদের যাতায়াত সমস্যার কথা বার্তা২৪.কম-কে বলেছে।
স্কুল কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, বর্ষা মৌসুমে শিশুদের স্কুলে যেতে খুবই অসুবিধা হয়। এ সময় উপস্থিতি একেবারেই কমে যায়। একটি সেতু হলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়বে। এ অঞ্চলের মানুষের চলাফেরায় সুবিধা হবে।
মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রনব চন্দ্র মন্ডল বলেন, ব্রিজ ছাড়া নদী পারাপারের এমন দূর্ভোগ নিয়ে পঞ্চাশ বছর ধরে ভুগছে এই বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এছাড়া এখানকার সাধারণ মানুষজনকে সব সরকারি বা অন্যান্য কাজের জন্য এই সাঁকো পার হয়ে যাতায়াত করতে হয়। ১৫টি গ্রামের মানুষের ওই একটি বাঁশের সাঁকোই ভরসা। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিনয়ের সাথে ব্রিজ নির্মাণের আবেদন জানাচ্ছি।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায় বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সদর উপজেলার আমদই ইউনিয়নের অন্তর্গত মুরারীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তুলসীগঙ্গা নদীতে নির্মিত বাঁশের সাঁকোতে যাতায়াত করছে। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিলো। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ছিলাম। আশা করি খুব শিগগিরই সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।