মেহেরপুরে এবার গেল বছরের তুলনায় বোরো ধানের আবাদ কমে হচ্ছে। গেল বছর ধানের দাম কম পাওয়ায় চাষিরা অন্য ফসলের দিকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ফলে দেশের খাদ্য চাহিদার প্রধান উৎস ধান উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলায় ধান, গম ও সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার ফসল আবাদ হয়ে থাকে। বছরের তিন মৌসুমে ধান অর্থাৎ আমন, আউশ ও বোরো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উৎপাদন হয়ে আসছে। এ ধারায় ছেদ পড়েছে গেল বছরের আউশ মৌসুম থেকে। গেল বছরের বোরো ধান তোলার পর ধানের মণ এক হাজার টাকা থেকে নেমে দাঁড়ায় ৫০০-৬০০ টাকায়। বোরো ধান কাটার পর থেকে শুরু হয় আউশ মৌসুম। ধানের দর পতনের ফলে আউশ ধান আবাদ প্রায় শুন্যের কোটায় গিয়ে দাঁড়ায়। গত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আমন ধান তোলার পরও ধানের দর একই রকম থাকায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে চলতি বোরো ধান আবাদের উপর ।
ধান উৎপাদনখ্যাত এলাকা জোড়পুকুরিয়া গ্রামের চাষি জামাল উদ্দীন বলেন, প্রতি বছর আমি ৫-৭ বিঘা জমি বোরো ধান আবাদ করি। এবার শুধুমাত্র পরিবারের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করছি।
রাইপুর গ্রামের চাষি মোকলেছুর রহমান প্রতি বছর ২০-২৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করে থাকেন। এবার তিনি ধান আবাদ করছেন না।
জানতে চাইলে মোকলেছুর রহমান বলেন, সেচের পানি দিয়ে বোরো ধান আবাদ করা হয়। তিন মৌসুমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় বোরো ধানে। গেল বছর বোরো ধান আবাদে লোকসান হওয়ায় এবার বোরো ধান আবাদ করছি না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৪৮০ হেক্টর। তবে এখনো পর্যন্ত যে পরিমাণ ধান রোপণ করা হয়েছে তা আশানুরূপ নয়।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এখনো ধান রোপণ চলছে। তবে চাষিরা সব সময় লাভজনক ফসলের দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়ে এটা বলা যেতেই পারে। ধান আবাদের খরচ কমাতে আধুনিক চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করতে চাষিদের পরামর্শ দিলেন তিনি।