টাকা ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজের ফাইলে স্বাক্ষর করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমতিয়াজ হোসেনের বিরুদ্ধে। এ তথ্য জানতে পেরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জন চন্দ্র পাল ইউএনও ইমতিয়াজ হোসেনকে তিরস্কার করে তাকে রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করতে বলেছেন!
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, অনিয়মের অভিযোগে আমি ইউএনওকে বকা দিয়েছি সত্য। তবে ভিক্ষা করার কথাটি সত্য নয়। এটা আমি কী জন্য বলবো? এরকম কোন কথা আমি বলিনি। অন্যদিকে বিষয়টি অবগত নন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইউএনও ইমতিয়াজ হোসেনও।
ইউএনও’র বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তথ্য ডিসিকে জানান কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম নুরুল আমিন। তিনি বলেন, আমি যেমন দোষ পেলে নেতাকর্মীকে শাসাই। ঠিক তেমনি অভিযোগ পেয়ে ডিসিও ইউএনওকে শাসিয়েছেন। তবে ডিসি কী বলেছেন, সেটা আমি বলতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও ইমতিয়াজ হোসেন টিআর কাবিখাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ফাইলে স্বাক্ষর করতে পিআইও অফিসের মাধ্যমে টাকা দাবি করেন। মোটা অংকের টাকা না দেওয়ায় তিনি ফাইলে স্বাক্ষর করেননি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) স্বাক্ষর করার আশ্বাস দিয়ে রাত ৯টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছেন, এরপর স্বাক্ষর না করে তিনি ব্যাটমিন্টন খেলতে চলে যান।
জানা যায় বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কমলনগর উপজেলা পরিষদের অডিটরিয়ামে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের উদ্যোগে কৃষকদের মাঝে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে বিনিয়োগ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ডিসি। দুপুরে ইউএনওর কার্যালয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন নেতাকর্মীদের নিয়ে ডিসির কাছে সরাসরি ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ডিসি জনসম্মুখে ইউএনওকে ভিক্ষা করতে বলেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা জানান, অভিযোগ পেয়ে ডিসি অঞ্জন চন্দ্র পাল ইউএনও ইমতিয়াজের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ সময় ইউএনওকে উদ্দেশ্য করে ডিসি বলেন, টাকার যদি এতই প্রয়োজন ভিক্ষা করেন। লক্ষ্মীপুরে ২ বছরের কর্মজীবনে ডিসি এমন পরিস্থিতি দেখেননি বলেও জানান তখন।
ওই মুহুর্তে কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি, ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর, বিকল্পধারার কমলনগর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাছেতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।