সবজির চাষ খ্যাত মেহেরপুর জেলার চাষিদের সৌভাগ্যের সুবাতাস বইছে। এখানকার চাষিদের উৎপাদিত নিরাপদ সবজি হিসেবে বাঁধাকপি এখন মালয়েশিয়ায় যাচ্ছে । এতে সবজি চাষের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। আর্থিক লাভের কথা মাথায় রেখে নিরাপদ সবজি উৎপাদনে আগ্রহী হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, নিরাপদ সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশে এবং বিদেশে। বিশেষ করে সবজি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা মেহেরপুর জেলায় সব ধরনের সবজি আবাদ হয় সারা বছরই। যা বিদেশে রফতানি করা গেলে চাষিরা যেমনি উপকৃত হবেন তেমনি আসবে বৈদেশিক আয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিদেশে রফতানির লক্ষ্যে মেহেরপুরে কীটনাশক সহনশীল ও নিরাপদ সবজি বাঁধাকপি চাষ করছেন চাষিরা। নিরাপদ সবজি হিসেবে চলতি মৌসুমে ৪৪ মেট্রিক টন বাঁধাকপি সরবরাহ করা হবে মালয়েশিয়ায়। গেল সপ্তাহে জমি থেকে কপিগুলো সংগ্রহ করেছেন রফতানিকারকরা। ক্ষেত থেকে কাগজে মুড়িয়ে কার্টুন ভর্তি করে রফতানি উপযোগী করা হয়েছে। রফতানিতে বাঁধাকপি বিক্রি করে অনেক বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ পাওয়া সম্ভব বলে জানান কয়েকজন কৃষক।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় এগ্রো ফ্রেশ নামের একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে বাঁধাকপি সংগ্রহ করছেন। রফতানিকারকের চাহিদা ও নির্দেশনা অনুযায়ী নিরাপদ বাঁধাকপি উৎপাদন করছেন চাষিরা।
রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ম্যানেজার রুবেল হোসেন বলেন, শতাধিক কৃষকের মাধ্যমে ৫০ হেক্টর জমিতে নিরাপদ উপায়ে বাঁধাকপি চাষ করা হয়েছে। চারা রোপণের পর থেকে কপি সংগ্রহ করা পর্যন্ত নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে রফতানি উপযোগী করে তোলা হয়। এবারে রফতানিতে সফল হলে আগামী বছর আরও অনেক সবজি রফতানি করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নিরাপদ সবজি উৎপাদনকারী কৃষক আনছার আলী বলেন, প্রতি বছরই শীতকালীন সবজিতে কৃষকের লোকসান হয়। এভাবে রফতানি করা গেলে সবজি চাষিদের ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বয়ে যাবে। ব্যাপকভাবে রফতানি করার আশা নিয়ে আগামী বছরে বেশি সবজি উৎপাদনের কথা বলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম শাহাবুদ্দিন আহমেদ নিরাপদ সবজির বাজার ধরে রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সবজি রফতানি হচ্ছে। রফতানির এ সুযোগ যাতে হাতছাড়া না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্ট সকলের নজর রাখতে হবে। তাহলে দেশে উদ্বৃত্ত সবজি থেকেই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।