বছরের পর বছর পলি জমে নীলফামারী জেলার দেওনাই, চাড়ালকাটা, যমুনেশ্বরী, বুড়িখোড়া, চারা, খড়খড়িয়া, ধুম, নাউতারা, ধাইজান, বামনডাঙ্গা, কলমদারসহ ১৯টি নদী আর ১০টি খাল প্রায় ভরাট হয়ে গেছে।
এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ২৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি নদী আর ১টি খাল খননের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীলফামারীর তিনটি ডিভিশন। কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে।
খননকৃত ১০ নদীর বালু আর পলিতে ভরে গেছে নদীর দু’পারে বিস্তীর্ণ এলাকার তিন ফসলি জমি। বিভিন্ন নদীর ৩৪২ কিলোমিটার খননকৃত বিপুল পরিমাণ বালু-পলি তিন ফুট পুরু স্তূপ করে ফসলি জমিতে রাখায় চাষাবাদ করতে পারছেন না ভূমি মালিকেরা। চাষাবাদ করতে না পারায় জমির ওপর নির্ভরশীল শত শত পরিবার পড়েছে চরম বিপাকে।
সরকারের নদী খননের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা দ্রুত এসব বালু আর পলি সরানোর জোর দাবি জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মোকলেছার রহমান (৫০) জানান, আমার দুই বিঘা জমিতে এখন বালুর স্তূপ। এবার আর চাষাবাদ করতে পারছি না। তাড়াতাড়ি বালুগুলো অপসারণ না করলে অনেক কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বার্তা২৪.কম-কে জানান, ফসলি জমিতে স্তূপ হয়ে থাকা খননকৃত বালু নিলামে বিক্রি করা হলে সরকারি কোষাগারে জমা হবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। পাশাপাশি ফসলি জমিগুলো চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত জমিতে পরিণত হবে।
তিনি জানান, গত ১০ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বালুর যথাযথ ব্যবহারে দুইটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নদী খনন কর্মসুচিকে সফল করতে নিবিড় পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে জানান, নদী থেকে খননকৃত বালুর যথাযথ ব্যবহারে জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটি সভার সিদ্ধান্তে একটি টেকনিক্যাল কমিটি আর একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই দুই কমিটির কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরে বালুর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, নদী থেকে খননকৃত বালু জনকল্যাণে ব্যবহারের পাশাপাশি নিলামে বিক্রি করার বিধান রয়েছে। এ কাজটি করবে জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটি।