যশোরে দুধ দিয়ে পরিষ্কার করা হলো আ.লীগের ৬ কার্যালয়

যশোর-৬ আসনের প্রয়াত এমপি ইসমাত আরা সাদেক সমর্থিত ছাত্রলীগের নেতাদের দখলে থাকা আওয়ামী লীগের ৬ কার্যালয় ‘দখলমুক্ত’ করে দুধ দিয়ে তা পরিষ্কার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী অভিযান চালায় পুলিশ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ। অভিযানে পুলিশ ছয়টি কার্যালয় থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র এবং ফেনসিডিলের বোতলও উদ্ধার করেছে।

উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেকের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী ইসমাত আরা সাদেক ২০১৪ সালে কেশবপুর আসন থেকে নির্বাচিত হন। এরপর তিনি সরকারের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হন। তার ছত্রছায়ায় থাকা ছাত্রলীগের কিছু সন্ত্রাসী ‘হাতুড়ি’ ও ‘গামছা বাহিনী’ নামে পরিচিতি লাভ করে। তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে কৃষকলীগের অফিসটি দখল করে। এছাড়া মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, চাঁদাবাজির মতো কাজ করতেন।

গত ২১ জানুয়ারি ইসমাত আরা মৃত্যুর পর কেশবপুর আসনটি শূন্য হয়। এরপর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করায় গা-ঢাকা দেন কথিত হাতুড়ি বাহিনী ও গামছা বাহিনীর সদস্যরা।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার দিনব্যাপী পুলিশের উপস্থিতিতে হাতুড়ি বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটি খুলে ধোয়া-মোছার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ কক্ষটি থেকে ওই বাহিনীর ব্যবহৃত দুটি ধারালো বেকি, চারটি তলোয়ার, একটি কিরিচ ও ফেনসিডিলের সাতটি বোতল উদ্ধার করে। এরপর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গরুর দুধ দিয়ে কক্ষগুলো ধুয়ে মুছে ফেলে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমিন জানান, ২০১৬ সালে হাতুড়ি বাহিনীর প্রধান আজিজের নেতৃত্বে উপজেলা কৃষকলীগের অফিসটি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়া হয়। সেই থেকে তারা ওই ঘরটি তাদের ব্যক্তিগত অফিস হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। মঙ্গলবার কৃষকলীগের অফিসসহ আরও কয়েকটি কার্যালয় উদ্ধার করার পর সেখানে অস্ত্র দেখতে পাওয়া যায়। এরপর পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ সেগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যায়। অস্ত্র যারা রেখেছিল, সেই সব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

কেশবপুর থানার ওসি সাঈদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বার্তা২৪.কম-কে জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তাফার কাছ থেকে খবর পেয়ে ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এসময় ঘরের সানশেডের ওপর থেকে দুটি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র ও ফেনসিডিলের খালি বোতল উদ্ধার করা হয়।