রংপুরের পীরগাছায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাপ্রাপ্ত কার্ডধারীদের কাছ থেকে ব্যাংক খরচের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কার্ড প্রতি ১০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দামুরচাকলা শাখা কর্তৃপক্ষ। ওই শাখার অফিস সহায়ক মোখলেছ মিয়া কার্ডধারীদের কাছ থেকে টাকা তুলছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
পীরগাছা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার অন্নদানগর, ইটাকুমারী ও কল্যাণী ইউনিয়নে মোট ভাতাভোগী রয়েছেন ৪ হাজার ১১ জন। এর মধ্যে দুই হাজার ৪২৯ জন বয়স্ক, ১ হাজার ২০ জন বিধবা ও ৫৬২ জন প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী আছেন। ভাতা হিসাবে প্রতিমাসে বয়স্ক ও বিধবাদের ৫০০ টাকা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীদের ৭৫০ টাকা করে দেয়া হয়। তারা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দামুরচাকলা শাখা থেকে ভাতা উত্তোলন করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের দামুরচাকলা শাখা কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই ভাতা বিতরণের সময় টাকা আদায় করে আসছেন। টাকা না দিলে কার্ডধারীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। টাকা ছাড়া কার্ড জমা নেয়া হয় না, টাকাও বিতরণ করা হয় না। পরবর্তীতে বকেয়া ভাতা বিতরণের সময় নতুন করে কয়েক গুণ টাকা আদায় করা হয়।
বয়স্কভাতা গ্রহণকারী অন্নদানগর ইউনিয়নের আজগার আলী বার্তা২৪.কমকে জানান, ব্যাংকে টাকা না দিলে হয়রানি করা হয়। তাই বাধ্য হয়ে সকলকে টাকা দিতে হয়।
ইটাকুমারী ইউনিয়নের বাসিন্দা শান্তনা রাণী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ব্যাংক খরচের কথা বলে আমার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়েছে। না দিলে ব্যাংকে ভাতার কার্ড জমা নেয়া হয় না।’
অভিযুক্ত অফিস সহায়ক মোখলেছ মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ব্যাংকের স্যাররা আমাকে টাকা নিতে বলেছে, তাই নিয়েছি।’
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের দামুরচাকলা শাখার ব্যবস্থাপক মনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘টাকা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানার পর মোখলেছকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এমন ঘটনা আবার ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পীরগাছা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অর্থ আদায়ের বিষয়টি জানার পর ব্যাংক ম্যানেজারকে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।’