গাইবান্ধার জেলার কৃষকের মাঠে অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে শতাধিক ইটভাটা। আর এই ভাটাগুলো গিলে খাচ্ছে কৃষিজমির টপ সয়েল। এর ফলে নিচু হচ্ছে জমি, উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে ফসলের।
সরজমিনে দেখা যায়, চলমান ইটভাটাগুলোতে ইট প্রস্তুত কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি জমির মাটি। এসব জমির উপুরি ভাগের উর্বর মাটি অবাধে যাচ্ছে ভাটাগুলোতে। ভাটার আশপাশের ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাক্টর দিয়ে বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন মাটি ভর্তি শতশত ট্রাক চলাচল করে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, গাইবান্ধা জেলায় ইটভাটা রয়েছে প্রায় ১৬৭টি। এর মধ্য ১৭টির পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র রয়েছে। লাইসেন্স পাওয়া ইটভাটাগুলোর বেশির ভাগই স্থাপন করা হয়েছে কৃষি জমিতে ও জনবসতি এলাকায়। আর পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লাইসেন্সবিহীন চলছে ১৫০টি ইটভাটা।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, পাশের একটি জমিতে মাটি তুললে বাধ্য হয়ে অন্যদেরকেও মাটি দিতে হচ্ছে। এমন বেকায়দায় ফেলে নামেমাত্র কিছু টাকা দিয়ে ভাটা মালিকরা মাটি কেটে সাবার করছে। কয়েকবছর আগে যেসব জমিতে আবাদ করা হয়েছিল সে জমিগুলোতে এখন জ্বলছে ইটভাটার আগুন। ফলে একদিকে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। এতে করে কমে যাচ্ছে ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ইটভাটা মালিক বলেন, প্রতিবছর কমপক্ষে প্রায় এক হাজার একর জমির মাটি শুধুমাত্র ইটভাটায় চলে যাচ্ছে। কোন কোন জমি থেকে পরপর কয়েক বছর মাটি নেয়া হচ্ছে। বেশির ভাগ জমি থেকে শুধুমাত্র উপরিভাগের মাটি নেয়া হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ভাটার আগুন নিভিয়ে জরিমানা আদায়সহ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এসব ইটভাটা।