মেহেরপুর জেলায় এবারো গম ক্ষেতে ব্লাস্ট আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে এর মাঝে আশার আলো নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বারি গম ৩৩। এ জাতে নেই কোনো ব্লাস্ট কিংবা অন্য কোনো রোগ বালাই। ফলে কৃষকদের মাঝে গম চাষ নিয়ে এক নতুন আশার আলো সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মেহেরপুর জেলার ৩টি উপজেলায় ১১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ৬০০ হেক্টর বেশি। আর গেল বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বারি গম ৩৩ ক্ষেতগুলো ব্লাস্ট মুক্ত থাকলেও অন্যান্য জাতের বেশিরভাগ ক্ষেতে ব্লাস্ট দেখা দিয়েছে। বারি গম ৩৩ এর পাশাপাশি বারি গম ৩০ ক্ষেতেও ব্লাস্ট অনেকটাই কম আক্রান্ত বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর অঞ্চলে স্বদেশ সিড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত বারি গম ৩৩ বীজ কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করে। এ জাতের গম ব্লাস্ট আক্রান্ত না হওয়ায় কৃষকরা স্বস্তিতে রয়েছেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলা আলমপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এবার আমি চার বিঘা জমিতে বারি গম ৩৩ বীজ উৎপাদন করছি। পাশের ক্ষেত ব্লাস্ট আক্রান্ত হলেও আমার ক্ষেতে কোনো ব্লাস্ট নেই।’
স্বদেশ সিড পরিচালক (উৎপাদন) জিনারুল ইসলাম দিপু বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ২০১৭ সালে দেশের একমাত্র ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত হিসেবে বারি গম ৩৩ জাতটি অবমুক্ত করে। ২০১৮ সালে দিনাজপুর গম গবেষণা কেন্দ্র থেকে আমরা বারি গম ৩৩ এর ব্রিডার বীজ সংগ্রহ করে চাষের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করি। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ওই বীজ বিভিন্ন কৃষি অফিস ও কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছি। ব্লাস্ট মুক্ত থাকায় আগামী বছর বীজ সরবরাহের জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি।’
মেহেরপুর জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার মামুনুর রশিদ জেলার বিভিন্ন মাঠে বীজ উৎপাদন প্লট ও চাষিদের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন।
গমের রোগ প্রসঙ্গে মামুনুর রশিদ জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এবার গম ক্ষেত ব্যাপকভাবে রোগাক্রান্ত হয়েছে। ব্লাস্ট ও রাস্ট লেগে গমের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। শুধুমাত্র বারি গম ৩৩ এর কোনো রোগবালাই নেই। আর বারি গম ৩০ এর সামান্য রোগ আছে। এ দু’টি জাত আগামী বছরগুলোতে চাষ বৃদ্ধি করা গেলে ব্লাস্ট প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।