ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাসের জন্য ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এই ২ মাস যেসব জেলেরা মাছ শিকার থেকে বিরত থাকবে, তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদোনার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে মৎস্য বিভাগ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালনা করা হবে বিশেষ অভিযান। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করলে জেল-জরিমানা করা হবে।
মৎস্য বিভাগ জানায়, মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ডিম ছাড়ে। তাই ১৯০ কিলোমিটার এলাকা মাছের অভয়াশ্রম হিসেবে গণ্য করা হবে। মাছের ডিম ছাড়ার প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। এসময় যাতে জেলেরা মাছ শিকার থেকে বিরত থাকে সেজন্য জেলা মৎস্য বিভাগ বিভিন্ন হাট-বাজার এবং মৎস্য অবতরণকেন্দ্রে সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
ভোলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতীক দে বলেন, জেলেরা যাতে ইলিশ শিকার না করে সেজন্য প্রচার-প্রচারণা ও সচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ২৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টার পর থেকেই ইলিশ শিকার নিষিদ্ধ।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের জন্য বিশেষ ভিজিএফ চাল দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নিবন্ধিত জেলেরা প্রতিমাসে ৪০ কেজি করে মোট চার মাস চাল পাবেন। তবে নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে যদি মাছ ধরেন, তাহলে আমরা প্রচলিত আইনের সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল অথবা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
জেলেদের দাবি, সরকারিভাবে বরাদ্দ চাল সব জেলে সঠিকভাবে পায় না। তারা বলছেণ জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯২ জন হলেও চাল পাচ্ছেন ৭০ হাজার ৯৪৩ জন।
জেলে নুরে আলম বলেন, সরকার প্রতি বছর মাছ ধরা বন্ধ রাখে। আমরা সরকারের আইন মানি। কিন্তু সরকার যে চালটা দেয় তাতো অনেকেই পায় না। আমরা এটার সমাধান চাই।
সালাহউদ্দিন নামের আরেক জেলে বলেন, আমাদের পেশাই মাছ ধরা। দুই কাজ করতে না পারলে খামু কি। কিস্তির টাকা কেমনে দিমু। সরকার যে চাল দেয় সেটাতো সবাই পায় না। আর কিস্তির টাকারতো কোনো মাফ নাই। সরকার যদি ওই দুই মাস কিস্তির টাকাটা বন্ধ করে দিতো। তাহলে আমরা আর নদীতে মাছ ধরতে যাইতাম না।
জেলেদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতীক দে বলেন, একই পরিবারের অনেকজন জেলে থাকায় এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।